লিয়ন মীর : আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেছেন, স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্ক স্থাপন করলে বিদ্যমান আইনে স্ত্রীর কোনো শাস্তির বিধান নেই।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন অপরাধ এবং এই অপরাধে শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু সেটা শুধু পুরুষের বেলায়, নারীর বেলায় নয়। আইন বলছে, কোনো বিবাহিত পুরুষ যদি অন্য কোনো বিবাহিত বা অবিবাহিত পরনারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে সেটা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ এবং এই অপরাধে অপরাধী পুরুষকে শাস্তি দেয়ার জন্য আইন রয়েছে। তবে কোনো বিবাহিত নারী যদি অন্য কোনো বিবাহিত বা অবিবাহিত পুরুষের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করে, এক্ষেত্রে নারীর কোনো অপরাধ নেই, অপরাধ হবে ওই পুরুষের, যে পুরুষ নারীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আইনে আছে- এক্ষেত্রে নারী নির্দোষ, আইনে নারীর কোনো শাস্তি নেই। শাস্তি হবে পুরুষের।
তিনি বলেন, ১৮৬০ সালের এই পুরনো আইনটিতে বলা হয়েছে- নারী হচ্ছে পুরুষের সম্পত্তি। তাই পুরুষের সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পুরুষের নিজের। উদাহরণ দিয়ে এমনভাবে বলা যায়, কোনো ব্যক্তি যদি পুরুষের এই সম্পত্তি চুরি করে তাহলে যিনি চুরি করেছেন তিনি চোর, অপরাধ চোরের, এখানে সম্পত্তির কোনো অপরাধ নেই। তাই চুরির দায়ে চোরকে শাস্তি দিতে হবে, সম্পত্তিকে নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে পরকীয়ার এই আইনটি বাস্তবসম্মত নয়, একেবারেই সেকেলে। কেননা একটি বিবাহিত সম্পর্কের মধ্য থেকে যেহেতু স্বামী-স্ত্রী পরকীয়ার মাধ্যমে একই ধরনের প্রতারণা করছে এবং এই প্রতারণা যেহেতু আইনের দৃষ্টিতে পুরুষের ক্ষেত্রে অপরাধ, সেহেতু নারীর ক্ষেত্রেও অপরাধ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। একই অপরাধে পুরুষের শাস্তি হচ্ছে, কিন্তু নারীর শাস্তি হচ্ছে না, এটা একপেশে আইন। এই একপেশে আইনটির পরিবর্তন করা দরকার। কেননা একই গাছে ভিন্ন ফল হতে পারে না।
আপনার মতামত লিখুন :