লিহান লিমা: ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয় সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে কক্সবাজারে নির্মাণ করা হয় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম শরণার্থী শিবির, যেখানে এখন ৯ লাখেরও বেশি মানুষের বসতি, যার ৮০ভাগই নারী এবং শিশু। রয়টার্স
১৮ মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ সরকার, ১৪৫টি বেসরকারী এনজিও এবং ত্রাণ সংস্থা স্থায়ী আবাসন, সড়ক, স্যানিটেশনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ত্রাণকর্মীরা জানান, রোহিঙ্গাদের আসার কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও শরণার্থী সংকট সমাধানের কোন চিহ্ন না মেলায় নিরাপদ স্থায়ী আবাসন নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন তারা। বিশেষ করে মে মাসে সাইক্লোনের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।
ইন্টার সেকশস কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ (আইএসসিজি) এর মুখপাত্র নায়না বোস বলেন, ‘এটি কাজ করার জন্য সহজ জায়গা নয়, কারণ জনসংখ্যা এবং পরিবেশ কোনটিই নিয়ন্ত্রণে নেই’।’ তিনি আরো বলেন, ‘এটি অন্য যে কোন শরণার্থী সংকটের চেয়ে কঠিন এবং বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তর মানবিক চ্যালেঞ্জ।’
রয়টার্স আরো জানায়, আন্তর্জাতিক চুক্তিবদ্ধ কর্মীরা শিফট অনুযায়ী ৮ সপ্তাহ কাজ করার পর ১ সপ্তাহ বিরতিতে যান। কিন্ত কক্সবাজারে বিনোদনমূলক কার্যক্রম সীমিত। বাংলাদেশ মুসলিম দেশ হওয়ায় শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মানের কয়েকটি হোটেলে এলকোহল পাওয়া যায়, কিছু কর্মী ইয়োগা ক্লাস এবং বইয়ের ক্লাবে যান। নারীদের রক্ষণশীল পোশাক পরিধানসহ সাঁতারেও নানা বিধি-নিষেধ রয়েছে। অনেক কর্মী সমুদ্রে হাঁটা পছন্দ করলেও রাত ১০টার পর তাদের হোটেল থেকে বের না হতে নির্দেশ রয়েছে।
ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র ফাইরাস আল খাতেব বলেন, আমি পাঁচটি দেশে শরণার্থীদের সঙ্গে কাজ করেছি কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট অনেক চ্যালেঞ্জিং। প্রথমত, তাদেরকে কাজের সঙ্গে যোগ করা কঠিন, বেশিরভাগ রোহিঙ্গাই অশিক্ষিত এবং শরণার্থী শিবিরের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অজ্ঞাত।’ বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মুখপাত্র জিমা স্লোডন বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার জন্য খাদ্য সরবরাহও শিবিরের একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’ অন্যদিকে বনউজাড়ের কারণে স্থানীয়দের বন থেকে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :