লিহান লিমা: শীতল যুদ্ধের সময় রাশিয়ার সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা দেয়ার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনও মস্কোকে পরমাণু চুক্তি সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন। এই চুক্তি থেকে সরে গেলে তাদের পক্ষে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে আর কোন বাধা থাকবে না। এক্সপ্রেস, সিএনবিসি
চুক্তি অনুযায়ী কেউই কোন দেশের স্থল থেকে অন্য দেশে আঘাত হানতে পারে (৩০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ মাইল) এমন কোন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি, পরিক্ষা ও ব্যবহার করতে পারবে না। তিন দশক ধরে ইউরোপিয় দেশগুলো এই চুক্তি অনুসরণ করে আসছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি, পরীক্ষা এবং ব্যবহারের এই চুক্তি ভঙ্গ করলে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা আবার শুরু হবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার স্থিতিশীলতা খর্ব করা সহ এটিকে হুমকির মুখে ফেলবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলছেন, ১৯৮৭ সালে হওয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যকার চুক্তি ভঙ্গ করে ক্ষেপণাস্ত্র হালনাগাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো। কিন্তু মস্কো বলছে, তারা চুক্তি অক্ষুণœ রেখেছে।
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্ট এর গবেষক আবিগিল স্টোয়ি বলেন,‘ সব কূটনৈতিক আলোচনার পথ উন্মুক্ত থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি থেকে সরে যাওয়া রাশিয়াকে কোন বাধা ছাড়াই ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা উন্নয়নের সুযোগ করে দেবে।’
প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিয়ারে ইমানুয়েল থমসন বলেন, ২০০২ সালে অ্যান্টি-ব্যালেস্টিক মিসাইল চুক্তি ভঙ্গ করে যুক্তরাষ্ট্র আগেই পারমাণবিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করেছে। আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাপের দিতে তাকান তাহলে দেখবেন ইউরোএশিয়াজুড়ে যুক্তরাষ্ট্র মিসাইল প্রতিরক্ষা ঘাঁটি স্থাপন করে রেখেছে, যা কিনা রাশিয়া এবং চীনকে বৃত্তবন্দি করার জন্য করা হয়েছে। তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক আইনের ওপর সার্বভৌমত্ব কায়েম করতে কাজ করছে। সবসময়ই তারা নিজেদের ক্ষমতাশীল ও শক্তিশালী বলে অন্যদের আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করেছে।’
মার্কিন ভিত্তিক রুশ বিশ্লেষক মার্টিন ম্যাকুলি বলেন, আসলে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার চেয়ে চীনকে নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছে আইএনএফ আর কাজ করছে না, তারা নতুন একটি চুক্তি চায়, এবং ট্রাম্প তাই বলছেন।
আপনার মতামত লিখুন :