সুজন কৈরী : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গত দেড় বছরে প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতরা ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় সীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সিআইডি। সিআইডি বলছে, নিয়োগ ও ভর্তিতে প্রশ্নফাঁস এবং ডিজিটাল জালিয়াতের দুই আলাদা চক্রকে তারা আইনের আওতায় এনেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলোৎপাটনের আদ্যোপান্ত তুলে ধরে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত সর্ববৃহৎ প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলোৎপাটন হয়েছে। সর্বশেষ ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াত চক্রের মূল হোতা হাফিজুর রহমান হাফিজ ও মাসুদ রহমান তাজুলসহ এখন পর্যন্ত দুটি চক্রের ৪৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন।
সিআইডি জানায়, ভর্তি ও নিয়োগ পরীক্ষায় মূলত দুই ভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র প্রশ্ন ফাঁস করে। অন্য চক্রটি পরীক্ষার দিন প্রশ্ন সংগ্রহের পর সমাধান বের করে। এরপর ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে তা পরীক্ষার্থীদের সরবরাহ করে। সিআইডি প্রশ্নফাঁস চক্রটিকে আগেই শনাক্তসহ অপরাধীদের গ্রেফতার করেছে। এবার তারা ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াতি চক্রটিকেও গ্রেফতার করেছে।
সিআইডি বলছে, গত কয়েক দিনের টানা সাড়াশি অভিযানে ডিজিটাল জালিয়াত চক্রের মূল হোতা বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস, ৩৮-তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত ইব্রাহীম মোল্লা, বিএডিসির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, আইয়ুব আলী বাঁধনসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। এই চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে লাখো তরুণের স্বরপ্ন চাকরী বিসিএস পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করেছে বলে জানা যায়।
সিআইডি বলছে, ডিজিটাল ডিভাইস জালিয়াত চক্রের ৬ মূল হোতা অলিপ, ইব্রাহীম, মোস্তফা, তাজুল, হাফিজ ও বাঁধনের প্রত্যেকের নিজস্ব সহযোগী চক্র ছিল। এদের মধ্যে গত কয়েক দিনের অভিযানে হাফিজ ও তাজুল গ্রেফতার হয়েছে।
সিআইডি জানায়, এছাড়া এ চক্রের কাছে ৩০ কোটি টাকা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসে যারা সুবিধাভোগী তাদেরকেও আটক করা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :