মঞ্জুর মোর্শেদ : শীত মৌসুমে শুরুর আগে থেকেই সাতক্ষীরা জেলায় নতুন স্বাদেও খেজুরের গুড় ও পাটালির জন্য অধীর হয়ে ওঠেন শিশু-কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা। দেখা যায় খেজুর গাছে গাছিদের ব্যস্ততার বিভিন্ন দৃশ্য খেজুর গাছ কাটা থেকে শুরু করে রস আহরণ করে সেই রস থেকে গুড় তৈরি করা পর্যন্ত বেশ ব্যস্ত সময় পার করে থাকে গ্রামীণ জনপদের গাছিরা। জেলার গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে গাছিরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাড়তি উপার্জনের জন্য খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে। খেজুরের রস ও গুড় থেকে তৈরি হয় পাটালি। জেলায় চলতি মৌসুমে ২৩৮ হেক্টর জমিতে ৮২৬ মেট্রিকটন খেজুরের গুড় ও পাটালির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। সূত্র : বাসস
তালা উপজেলার সেনেরগাতি গ্রামের গুড় ব্যবসায়ী আনন্দ দাস জানান, জেলায় খেজুরের গুড় ও পাটালি সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় তালা উপজেলায়। এরপরে কলারোয়া ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় খেজুর গাছ বেশি রয়েছে। খেজুরের গুড় ও পাটালির জন্য তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা, জাতপুর , খলিসখালী, খেসরা, নগরঘাটাসহ বেশ কিছুহাট রয়েছে। এছাড়া কলারোয়া উপজেলার খোরদহ, কলারোয়া, সোনাবাড়িয়া, সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা, ফিংড়ি, আখড়াখোলা এবং দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া, গাজীরহাট, টাউনশ্রীপুর, কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা, তারালি, মৌতলা ইত্যাদি স্থানে খেজুরের গুড় ও পাটালি প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়। এসব গুড় ও পাটালি যশোর জেলার কেশবপুর ও মনিরামপুর এবং খুলনা জেলার ডুমুরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা বিক্রির উদ্দেশ্যে কিনে নিয়ে যায়।
গাছি নাসিরুদ্দীন জানান, আশ্বিন-কার্তিক মাসে খেজুর গাছ কাটা হয়। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত খেজুরের রসের আমেজ অন্যরকম। খেজুরের গুড় পাটালির স্বাদ ও গন্ধের কারণে এসময় জেলার বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ বেশ উৎসুক থাকেন। নারীরা খেজুরের গুড়ের পিঠা ও পায়েস তৈরিতে পার করেন ব্যস্ত সময়। তাই বাজারে গুড় ও পাটালির যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয় তাদেরকে। সদর উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম বলেন, তার স্বামী গাছি। তিনি খেজুরের পাতা সংগ্রহ করে আনেন যা দিয়ে তিনি তৈরি করেন পাটি, হাতপাখা ও বিভিন্ন শৌখিন কারুশিল্প। আর এসব হাতে তৈরি জিনিসপত্র তাদের সংসারে এসেছে স্বাচ্ছন্দ্য। আবার শুকনো পাতা জ্বালানির কাজেও ব্যবহৃত হয়।