নূর মাজিদ : জার্মানি থেকে বন্যবরাহের প্রবেশ বন্ধ করে নিজেদের খামার শিল্পকে সুরক্ষিত রাখতে দেশটির সঙ্গে নিজেদের সীমান্তে প্রায় ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এক বেড়া নির্মাণ করছে স্ক্যান্ডিনেভিয় দেশ ডেনমার্ক। দেশটির শঙ্কা বন্যশুকর বিভিন্ন সংক্রামক রোগ যেমন সোয়াইন ফ্লু বা আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার ছড়িয়ে তাদের শুকরের খামার শিল্প ধ্বংস করে ফেলতে পারে। এই লক্ষ্যে গত বছরের জুন মাসেই এই দেয়াল নির্মাণের অনুমোদন দেন ডাচ আইনপ্রনেতারা। এরপর গত সোমবার জার্মান সীমান্তঘেষা পোডবোর্গ এলাকা থেকে থেকে পাঁচ মিটার উঁচু এই দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে । ফক্স নিউজ
ডাচ কতৃপক্ষ জানায়, বন্যশুকরের পাল দীর্ঘদিন ধরেই ডাচ কৃষকদের ফসল নষ্ট করে আসছে। পাশাপাশি সংক্রামক রোগের জীবাণুবহন করে তারা খামারে পালিত শুকরের মাঝে ছড়িয়ে দেবে দেশটির খামারিদের মাঝে এমন উদ্বেগও কাজ করছে। ডেনমার্ক পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ শুকরের মাংস রপ্তানিকারক দেশ। দেশটিতে প্রায় ৫ হাজার শুকরের খামার রয়েছে। যেখানে বাৎসরিক ২ কোটি ৮০ লাখ শুকর উৎপাদন করা হয়। ডাচ সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাহিরে বাৎসরিক ১১ বিলিয়ন ক্রোন বা ১৬৮ কোটি ডলারের শুকরের মাংস রপ্তানি করে। যা ডেনমার্কের মোট রপ্তানি আয়ের অন্তত ৫ শতাংশ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশটির মোট শুকরের মাংস রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ক্রোন না ৪৫৯ কোটি ডলার। এই বিপুল পরিমাণ মাংস রপ্তানিখাতকে সংক্রামক রোগ থেকে নিরাপদ রাখতেই বেড়া নির্মাণ করা হচ্ছে।
এদিকে ডাচ সরকারের এই সীমান্ত বেড়া নির্মাণ নিয়ে অনলাইনের সামাজিক গণমাধ্যমে দেশটির অনেক নাগরিক কৌতুকপূর্ণ রাজনৈতিক মন্তব্য প্রকাশ করেছেন। তারা এই দেয়ালকে মেক্সিকো সীমান্তে অভিবাসী ঠেকাতে ট্রা¤েপর দেয়াল নির্মাণের সঙ্গে তুলনা করে এসব হাস্য-রসাত্মক মন্তব্য করেন।
টুইটারে এক ডাচ নাগরিক লিখেছেন, কে এই দেয়াল(বেড়া) নির্মাণের অর্থ দেবে? নির্ঘাত এবার সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হতে চলেছে!
অপর এক নাগরিক লেখেন, শুকর প্রাচীর নির্মাণ কর এবং ডেনমার্ককে শুকরশুন্য দেশ বানাও।
যদিও এই সকল কৌতুকের মাঝেই ইউরোপীয় কাউন্সিলের বিদেশনীতি বিষয়ক সহকারি পরিচালক কার্ল বিড বলেন, এটা কোন দেয়াল নয় বরং একটি মামুলি বেড়া, তবে প্রাচীন যুগে বহিঃশত্রুর হামলা ঠেকাতে এখানে সত্যিই একটি দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছিলো।
আপনার মতামত লিখুন :