শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১১:২৯ দুপুর
আপডেট : ২৯ জানুয়ারী, ২০১৯, ১১:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সিএনজি-র ১২০ কোটি টাকা বকেয়া আদায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছে তিতাস

শাহীন চৌধুরী: অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানে ইতিপূর্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বেশ কিছু কর্মকর্তা চাকরি হারান। অনেককে আবার অন্যত্র বদলি করা হয়। এ পর্যায়ে তিতাসে আবার শুরু হয়েছে বকেয়া বিল আদায়ের জন্য বিশেষ অভিযান। এক্ষেতে সবচয়ে বড় বিল খেলাপী সিএনজি স্টেশনের মালিকরা। সিএনজি স্টেশনগুলোর প্রায় ১২০ কোটি টাকা বকেয়া আদায়ে এখন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু কয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিতাসের সিএনজি শ্রেণির গ্রাহকসংখ্যা ৩৮২। এর মধ্যে বিলখেলাপি ২৯টি কোম্পানি। তাদের কাছে মোট পাওনা প্রায় ১২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু দুই গ্রাহকের কাছেই তিতাসের বকেয়া প্রায় ৪১ কোটি টাকা। কোটি কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধের জন্য নোটিশ দিলেও ১৫টি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিক উল্টো তিতাসের বিরুদ্ধে মামলা করে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। একটি স্টেশন সাত কোটি টাকা বকেয়া রেখে নাম পরিবর্তন করে ব্যবসা করছে। এর মালিক সরকারি দলের জনৈক নেতা।
জানা গেছে, সাভারের বলিয়ারপুরের শ্যামলী ত্রিনয়নী সিএনজি স্টেশনের কাছে বকেয়া বিল ও জরিমানাসহ ৩২ কোটি ৯ লাখ টাকা পায় তিতাস। আর এনআর সিএনজি স্টেশনের কাছে পাওনা ৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এই শ্যামলী পরিবহনের মালিক পরিচালক রমেশ ঘোষ এই দুটি সিএনজির মালিক। অভিযোগ রয়েছে, তিতাসের কিছু কর্মকর্তার সাথে আঁতাত করে বিল বকেয়া রেখেছেন তিনি। উল্টো তিতাস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করে ব্যবসা করে যাচ্ছিলেন। সম্প্রতি শ্যামলী ত্রিনয়নী সিএনজির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, বিলখেলাপির তালিকায় থাকা কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর এলাকার বেলাবো ফিলিং স্টেশনটির কাছে পাওনা সাত কোটি ৯ লাখ টাকা। একাধিক নোটিশের পরও স্টেশনটির মালিক বিল পরিশোধ করছেন না। স্টেশনটির মালিক ছিলেন বেলাবো উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহসান হাবিব বিপ্লব, ভৈরব পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন মিন্টু ও ওসমান গণি। তবে বিপ্লব ও ওসমান এখন আর ব্যবসার সঙ্গে নেই। স্টেশনটির নাম পরিবর্তন করে এখন মিন্টু সিএনজি স্টেশন নামে চালু আছে।
সূত্রমতে, ডেমরা এলাকার ক্যাব এক্সপ্রেস (বিডি) লিমিটেডের বকেয়ার পরিমাণ ৪০ লাখ ২৭ হাজার, রায়েরবাগ মাতুয়াইল আল ফারুক সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ৬ কোটি ৬ লাখ এবং একই এলাকার কন্টিনেন্টাল সিএনজি স্টেশনের ৩ কোটি ৬২ লাখ, গাবতলীর যমুনা সিএনজি স্টেশনের ৫ কোটি ৬০ লাখ, সাভারের এইচ কে ফিলিং স্টেশনের ১ কোটি ৮ লাখ, নয়াপল্টনের মুন সিএনজি স্টেশনের ১ কোটি ৫৪ লাখ, পরিবাগের শাহাজান এন্টারপ্রাইজের ১ কোটি ২৬ লাখ, উত্তর বাড্ডার মক্কা সিএনজি স্টেশনের ৯০ লাখ ৫০ হাজার, মানিকগঞ্জের রুমী ফিলিং স্টেশনের ৪৪ লাখ ৬ হাজার, নরসিংদীর শিবপুরের এপেইস ফিলিং স্টেশনের ২০ লাখ ৫৪ হাজার, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার ফিদা ফিলিং স্টেশনের ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। বিলখেলাপি ২৯টি স্টেশনের মধ্যে ১৫টির মালিক বিল পরিশোধ না করে উল্টো মামলা দিয়েছেন। তবে পাঁচটি স্টেশনের মালিক মামলায় না গিয়ে কিস্তিতে বিল পরিশোধের আবেদন করে সুযোগও পেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তিতাসের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান খান বলেন, মাঠপর্যায়ে অনেক কিছু হচ্ছে, সব কিছুই তো আমার নলেজে নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, বিলখেলাপি সিএনপি স্টেশনগুলোর বিরুদ্ধে গ্যাস চুরির অভিযোগ রয়েছে। এসব স্টেশনের মালিকদের মধ্যে অনেকেই বিএনপি, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে জড়িত। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিতাসের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়