আমিরুল ইসলাম : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে যারা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের শুধু প্রশাসক হলে হবে না, কর্মকর্তাদের অভিভাবক হতে হবে।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সবকিছু দেখেছেন। তিনি সবকিছু জানেন । তিনি এমন কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যে নির্দেশনাগুলো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য দরকার। আমাদেরর যে সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে, সেগুলো শুধু স্বাস্থ্যব্যবস্থা বা স্বাস্থ্য-মন্ত্রণালয়ে নয়, সবক্ষেত্রেই আছে। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, আশা করি সেটা সবাই পালন করবে। আমাদের স্বাস্থ্যখাতের সমস্যাটা যদি একমুখী দেখা হয়, তাহলে ঠিক হবে না। স্বাস্থ্যখাতের মূল সমস্যাটা হচ্ছে, ম্যানেজমেন্টের জায়গাটা। এখন ঢালাওভাবে সবাই যে কর্মক্ষেত্রে থাকছে না, তা কিন্তু নয়। ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হচ্ছে ম্যানেজ করা। এখানে আমাদের স্বাস্থ্য প্রশাসন আছে। একেবারে মন্ত্রী থেকে শুরু করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পর্যন্ত যে চেইন রয়েছে, এটা দুর্বল হয়ে আছে। প্রশাসনকে সময় দিতে হবে। তারা খুব ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন কারণে, তাদের প্রচুর কাজ। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই হবে। এটা ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব, এ নিয়ে কোনো আপোস করা যাবে না। অধ্যাপক থেকে শুরু করে বাংলাদেশে ডাক্তার আছে মোট ২১ হাজার ৯ শত ১৮ জন। প্রতিবছর দুই হাজার ডাক্তার আসে পোস্ট গ্রাজুয়েশনে। আর অনেক জায়গাকে ডাক্তারদেরকে ডেপুটেশনে দেয়া হয়। একটা মেডিকেল কলেজ হলে সেখানে প্রভাষক হিসেবে ঐ জেলা থেকে দেয়া হয়। আবার ডাক্তারদেরকে রোস্টার ডিউটি করতে হয়। একই ডাক্তারকে মর্নিং, ইভেনিং, নাইট করতে হয়। প্রশাসনের যে চেইন রয়েছে সেটাকে শক্ত হতে হবে। প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টা চিকিৎসক দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসকদের সাথে সময় দিতে হবে।
ডা. কামরুল হাসান আরও বলেন, যারা প্রশাসক তাদেরকে ডাক্তারের আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোর ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু আদেশ দিয়ে ডাক্তারদেরকে দায়িত্ব পালন করানো যাবে না। ডাক্তারদের মানসিকতাটাও বুঝতে হবে। প্রশাসনের সাথে যারা দায়িত্বে আছেন, তাদেরও বিভিন্ন বিষয় একসাথে করতে হবে। একটা ছেলে ময়মনসিংহ বা খুলনা মেডিকেলে পড়ে যেখানে দায়িত্বপালন করতে যায় সেখানকার পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত থাকে না। শুধু প্রশাসক হলে হবে না, প্রশাসকদের অভিভাবক হতে হবে। কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে গেলে মনোযোগ থাকতে হবে। আমাদের মনিটরিং ফলোআপ খুব বেশি জরুরি সমস্ত খাতে। আমাদের সক্ষমতাটা কী সেটা খেয়াল রেখে তারপর প্রত্যাশা করতে হবে। যারা ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে তাদের মনোযোগ দিতে হবে, প্রচুর সময় দিতে হবে। আমাদের যারা কর্মকর্তা আছে ডাক্তার, নার্স তাদেরকে প্রচুর সময় দিতে হবে, কথা বলতে হবে, তাদের সমস্যাগুলো বুঝতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :