আল ফাহাদ : গাজীপুররে শ্রীপুরে বস্তায় পাওয়া ছয় টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জীবন্নাহার। টাকার জন্য কলহের জের ধরেই এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। অনেক সময় টাকার জন্য নির্যাতনের শিকার হতেন জীবন্নাহার। আর এই নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতেই নির্মমভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটান তিনি।
গত শনিবার দুপুরে গাজীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জীবন্নাহারের স্বীকারোক্তির বিষয়ে নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এসব তথ্য জানান। এসময় জীবন্নাহার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া তার স্বীকারোক্তির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
জীবন্নাহার স্বীকারোক্তিতে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমার কাছে টাকা চেয়েছে স্বামী রফিকুল ইসলাম। টাকা না দেওয়ার ফলে সে আমাকে অনেক মারধর করে। সে আমাকে সবসময় টাকা-পয়সার জন্য অত্যাচার করতো, মারধর করতো। এসময় তাদরে ঘরে মেয়ে মারিয়া আক্তার রোজাও উপস্থিত ছিল। পরে মেয়েকে আমার বোনের রুমে পাঠিয়ে দিয়ে বাহির থেকে একটা ইট নিয়ে এসে আমার মাথায় আঘাত করে সে শুয়ে পড়ে। সে শুয়ে পড়লে আমি উঠে এসে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। মাটিতে পড়ে গেলে আমি আরও তিন-চার বার আঘাত করি।
তারপরেও সে মারা না গেলে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করি। মারা যাওয়ার পর লাশ ওয়্যারড্রবের ভেতরে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়ে দেই। অফিস থেকে রাত ১১ টায় ঘরে ফিরে আসি। তারপর প্রথমে দুই পা কেটেছি, দেহ থেকে মাথা কেটে আলাদা করি, তারপর দুই হাত কেটেছি। মাথা আর হাত কেটে ময়লার ড্রামে ফেলে দিয়েছি। পা দুইটা প্যান্টের ভিতরে ঢুকিয়ে ময়লার ড্রেনে ফেলে দিয়েছি। বাকি দেহ বস্তায় করে ভরে , লুঙ্গী দিয়ে পেচিঁয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে বাড়ির পেছনে ফেলে দিয়ে আসি।
জীবন্নাহার আরও জানান, তাকে মেরে ফেলতে আমার কোন কষ্টই হয়নি। আমি মারধর খেয়ে, অত্যাচারের শিকার হতে হতে তার উপর থেকে সকল আবেগ অনুভ‚তি হারিয়ে ফেলি। তখন আমি কি করেছি আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আমি যা করেছি ভ‚ল করেছি। এই হত্যার সাথে অন্য কেউ জড়িত নেই । আমার মত অন্য কেউ যেন এই ভ‚ল না করে, ফাঁদে পা না দেয়।
আপনার মতামত লিখুন :