যুগান্তর : দক্ষিণ মেরু থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় রয়েছে বেশকিছু সাব গ্লেসিয়াল লেক বা হ্রদ। মারসার সে রকমই একটি হ্রদ। যেখানে মিলেছে সেই বিরল প্রাণের হদিস। অভিযাত্রী দলের নাম ‘সাব গ্লেসিয়াল অ্যান্টার্কটিক লেকস সায়েন্টিফিক অ্যাকসেস’ বা ‘সালসা’।
বিশেষ একটি যন্ত্র ও ক্যামেরার মাধ্যমে মারসার হ্রদের বরফের পুরু আস্তরণ ভেদ করে তারা পৌঁছে গিয়েছিলেন অনেক নিচে। সেখানে তারা দেখেছেন বরফের মধ্যেই রয়েছে পোস্তর মতো ছোট ছোট প্রাণীর অসংখ্য মৃতদেহ।
মেরু অঞ্চলে বরফের পুরু আস্তরণের নিচে থাকে এই সাব গ্লেসিয়াল লেক। বরফের নিচে থাকা এই হ্রদে শীতল জল তরল অবস্থায় থাকে। বরফের নিচে প্রাণের সন্ধান পেয়ে ‘সালসা’ অভিযানের সদস্য, নেব্রাস্কা-লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো প্যালিয়েন্টোলজিস্ট ডেভিড হারউড বলেছেন, এটা আশাতীত।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লেসিয়ার বিশেষজ্ঞ স্লায়েক তুলাজিক বলেছেন, অনুসন্ধানের এই ফলাফল সত্যিই খুব অবাক করে দিয়েছে আমাদের।গবেষকরা বরফের গভীরে যে প্রাণীর মৃতদেহ পেয়েছেন তা দেখতে অনেকটা পোস্তর মতো। তারা জানিয়েছেন, সেগুলো ‘টার্ডিগ্রেড’ গোত্রের প্রাণী। মাইক্রোস্কোপের তলায় চোখ রাখলে দেখা যাবে আট পা-ওয়ালা এই প্রাণীর দেহের গঠন অনেকটা কেঁচোর মতো।
তবে ঠিক কত বছর আগে এই প্রাণীরা জীবিত ছিল তা জানার জন্য তাদের দেহের কার্বন ডেটিং করবেন গবেষকরা। ওই প্রাণীর ডিএনএ সিকোয়েন্স সাজানোর চেষ্টাও চালানো হচ্ছে। এই দুটি কাজ শেষ হলে ওই প্রাণীর জীবনচক্র সম্পর্কে আরও তথ্য এবং তাদের অস্তিত্বের সময়কাল জানা যাবে।
এর আগে ২০১৩ সালে হুইলান্স হ্রদে এ রকম অভিযান চালিয়েছিল অন্য একটি গবেষক দল। তবে সেবার কিছু অণুজীব ছাড়া অন্য কিছু খুঁজে পাননি তারা। সেদিক থেকে ওই অঞ্চলে এই প্রথম উচ্চ গোত্রের প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেল।
আপনার মতামত লিখুন :