দেবদুলাল মুন্না: জর্জ বার্নার্ড শ’ ১৯২৫ সালে নোবেল পুরস্কার পান।এ পুরস্কার তিনি নিতে চাননি। তার স্ত্রী চারলডি টাউনসিনেড অনেক অনুরোধ করলে তিনি বলেন, ‘ এ পুরস্কার নিলে আমার হাইট কি বাড়বে? বেশি ভালবাসবে আমায়? এ পুরস্কার নেওয়া মানে তো নোবেল কমিটিকে আমি পুরন্কৃত করলাম। তুমি যদি তাই চাও তবে করব।’ উত্তরে তার স্ত্রী বলেন, ‘ টাকাটা নিয়ে আমাকে আন্দালুসিয়া ঘুরিয়ে এনো। বার্নাড শ বললেন, ‘ ওকে তবে তাই হবে।’ তিনি পুরস্কার নিলেন এবং আন্দালুসিয়া বেড়াতে গেলেন স্ত্রীসহ। বেড়ানোর পর ফিরে যাওয়ার সময় তিনি ঠাঠ্রাচ্ছলে স্ত্রী’কে বলেন ‘ এবার নিশ্চয়ই আমি যেকোন অজুহাতে নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে পারি , কি বলো?’ জর্জ বার্নাডশ এমনই খেয়ালি , রসিক এবং ফ্যাবিয়ান কমিউনিস্ট ছিলেন।শ লন্ডনের স্কুল অফ ইকনোমিক্স এর সহ প্রতিষ্ঠাতাও। তিনি আইরিশ ঔপন্যাসিক এবং নাট্যকার। জন্ম ১৮৫৬ সালে। আয়ারল্যাল্ডের ডাবলিনে। মৃত্যু ১৯৫০ সালে । ১৮৬৫ থেকে ১৮৭১ এর মাঝে শ চারটি স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং এর প্রত্যেকটিই তাকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি বিরুপ করে তোলে। পরবর্তীতে তিনি তার লেখায় স্কুলকে কারাগার এবং স্কুল শিক্ষককে কারাপরিদর্শক হিসেবে উপস্থাপনা করেছেন।তিনি মনে করতেন স্কুল হচ্ছে রাষ্ট্রের বিজ্ঞাপনী সংস্থা। নাগরিককে তার মতো করে গড়ে তুলতে চায়। তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না গ্রহণ করে নিজ উদ্যোগেই জ্ঞান লাভ ভাল। এ প্রসঙ্গে, বৃটিশ সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না নিলে আপনি সার্টিফিকেট পাবেন কোথায় ?চাকরি পাবেন কীভাবে ?’ উত্তরে শ বলেছিলেন, ‘ কেরাণী যারা হতে চায় তারা পড়বে। আমি বলেছি জীবনকে আবিস্কার করার জন্য একাডেমিক
পড়াশোনার ঈস্খয়োজন নেই।’
পরে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনোমিক্স প্রতিষ্ঠার পর তাকে ফের একাডেমিক শিক্ষার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন, ‘ এই স্কুল অন্যরকম শিক্ষা দিবে।’ এর প্রমাণ এখনও দিয়ে চলেছে লন্ডন স্কুল অফ ইকনোমিক্স।জীবনে অনেক প্রেম করেছেন শ। তবে সিরিয়াস প্রেমে পড়েন তার স্ত্রীরই । বিয়ে করার আগে। চারলডি টাউনসিনেডকে বলেছিলেন , ‘ প্রেম কিন্তু শুরু হয় সিগারেটে আগুন জ্বালানোর মতো। শেষ হয় ছাই এ । এ কথা শুনে প্রেমিকা বলেছিলেন, ‘তোমার আমার মতাদর্শ অভিন্ন। আশারাখি অন্য নারী শরীরের প্রতি ঝুঁকবে না। যদি আমাকে প্রতিদিন নতুনভাবে আবিস্কার করার চোখ থাকে তোমার। ’ শ বলেছিলেন, টেমস নদীর তীরে বসে , ‘তুমি আমার কাছে ক্যালেন্ডার না।জ্ঞানের বই। পৃষ্টা পৃষ্টা পড়েও শেষ করা যাবে না। শুধু পড়ব আর ভাববো।’
আপনার মতামত লিখুন :