বিডি জার্নাল: হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ও প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার পুত্র ড. রেজা কিবরিয়ার প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন তার বাবার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এতে অংশ নেননি রেজা কিবরিয়া। তারপরও এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে এলাকায়।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রেজা কিবরিয়া নবীগঞ্জে অবস্থান করে ওসমানী রোড, শেরপুর রোড, হাসপাতালে রোডসহ বিভিন্ন স্থানে ভোট প্রার্থনা করেন। এসময় এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হবিগঞ্জ জেলা বিনপির সহ-সভাপতি শেখ সুজাত মিয়াসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এলাকায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া। অতীতে বাবা হত্যার দায়ে বিএনপিকে ঘৃণা করলেও এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে এসেছেন তার ছেলে রেজা কিবরিয়া পুরো জেলাজুড়ে এ নিয়ে চলে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। আওয়ামী লীগেও দেখা দেয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি মেয়র আরিফ সিলেট থেকে এসে রেজা কিবরিয়ার প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়টিও নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
এ ব্যাপারে ড. রেজা কিবরিয়ার মোবাইল ফোনে বারবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের ঈদ-পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রী এএমএস কিবরিয়া। চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলীও এতে নিহত হন। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপি গুরুতর আহত হন। এছাড়াও আহত হন প্রায় ৭০ জন। এখনও তারা আঘাতের যন্ত্রণা শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘটনার পরদিন আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা করেন।
পরে মামলা দু’টি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন বাদী মজিদ খান। পরে ২০০৭ সালে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য ফের সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলার পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন্নেসা পারুল সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা তাজউদ্দিনের ভগ্নিপতি হাফেজ মো. ইয়াহিয়াসহ আবু বকর, দেলোয়ার হোসেন, শেখ ফরিদ, আবদুল জলিল ও মাওলানা শেখ আবদুস সালামকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
এর আগে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ প্রথম দফায় ১০ জনের বিরুদ্ধে ও দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা ১৬ জন থেকে বাড়িয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দু’জন ভারতে মারা গেছেন। আর তৃতীয় দফায় আসামির সংখ্যা আরও নয়জন বাড়িয়ে এ মামলায় মোট আসামি করা হয় ৩৫ জনকে।
আপনার মতামত লিখুন :