আমিন মুনশি : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে ১৫ বছরের মধ্যে উন্নত ও কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির আমীর ও চরমোনাইয়ের পীর মাওলানা সৈয়দ মুফতি মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
ইশতেহারে রেজাউল করীম বলেন, ‘ধর্মের ব্যাপক প্রচার করা হবে। ধর্মীয় অনুশাসন বাস্তবায়ন করা হবে। ধর্মের বিরুদ্ধে যাতে কেউ ব্যক্তিগতভাবে অথবা রাজনৈতিকভাবে কটূক্তি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আইন পাস করা হবে। কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করা হবে। মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনদের পাশাপাশি মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সেবককে সম্মানজনক ভাতা প্রদান করা হবে।’
ইশতেহারে ১৬টি অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা, দুর্নীতি-সন্ত্রাস নির্মূল করা, সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি আমূল সংস্কার করা, নারীদের অগ্রাধিকার প্রতিষ্ঠা, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ইত্যাদি।
রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনে ইশতেহারে ৫ দফায় বলা হয়েছে, ‘নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় অনুশাসন বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের আত্মিক পরিশুদ্ধিসহ চিন্তা-বিশ্বাস ও কর্মের পরিশুদ্ধি ঘটানো হবে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাস নির্মূলকরণে ৯ দফা কর্মসূচি সম্পর্কে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আদর্শ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ার লক্ষ্যে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বত্র মেয়েদের জন্যে আলাদা ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। নারীদের পাঠদানে পর্যাপ্ত নারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার মৌলিক বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে সিলেবাসকে যুগোপযোগী ও অভিন্ন করা হবে।’
এ ছাড়া নাগরিক সুবিধা প্রদানের জন্য ২০টি অঙ্গীকার, শিক্ষা বিষয়ে ৮ দফা, কৃষি বিপ্লব ও কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৫ দফা, আইন ও বিচার সম্পর্কে ৮ দফা, পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে ৫ দফা, অমুসলিম নাগরিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ৬ দফা, নারী অধিকার ও ক্ষমতায়ন সম্পর্কে ৯ দফা প্রস্তাব ইশতেহারে তুলে ধরা হয়।
ইশতেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোখতার হোসেন, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারী মহসচিব আমীনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, নির্বাচনি প্রচার সেলের গণমাধ্যম সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম কবির প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :