নূর মাজিদ : এন্টার্কটিকা বা উত্তর মেরুতে যে হারে হিমবাহ গলার প্রবণতা বাড়ছে তাতে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে তারা বিশ্বব্যাপী সমুদ্রস্তরের উচ্চতাবৃদ্ধির পাশাপাশি একটি মহা প্লাবণের আশঙ্কা করছেন। এই বিষয়ে ১ লাখ ২৫ হাজার বছর আগের বরফযুগের পূর্বে ইমিয়ান যুগের উষ্ণ জলবায়ুর সঙ্গে বিজ্ঞানীরা বর্তমান সময়ের সঙ্কটের তুলনা করেছেন। ইমিয়ান যুগে প্রাকৃতিক কারণেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বর্তমান যুগের মানবসৃষ্ট তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণকে ছাড়িয়ে যায়। ফলে ওই সময় বিপুল পরিমাণ হিমবাহ ও বরফ গলে যায়। ওই সময়ে বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬ থেকে ৯ মিটার পর্যন্ত বাড়ে। ফলে আজকের দিনে আমরা শুস্ক স্থলভাগ হিসেবে দেখি এমন অনেক ভূমি সেই সময় সমুদ্রে তলিয়ে যায়। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ওই বিপুল পরিমাণ জলরাশির সঞ্চিত অবস্থার সন্ধান পেয়েছেন। উত্তর মেরুর পশ্চিমাঞ্চলীয় হিমবাহগুলো পরবর্তী বরফযুগে ওই সকল পানি সঞ্চিত পানি ধরে রাখে। যা বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে গলছে।গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনভিত্তিক আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা এমন তথ্য প্রকাশ করেন। সায়েন্স ফোকাস
প্রতিবেদনে প্রকাশ, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি বরফ স্তরের নিচে উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের প্রবাহ বৃদ্ধি করেছে। ফলে পশ্চিমাঞ্চলীয় হিমবাহগুলো দ্রুতগতিতে ধ্বসে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে। অরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ অ্যান্ডার্স কার্লসন বলেন, ‘ইমিয়ান যুগেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়ে বিশ্বব্যাপী মহাপ্লাবণ সৃষ্টি হয়েছিলো। এখন আমাদের কাছে এই ঘটনার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।’ তবে এই ক্ষেত্রে আরো গবেষণার দরকার প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। ওই গবেষণার প্রাথমিক অনুমান সঠিক হলে উত্তর মেরুর পশ্চিমাঞ্চলীয় হিমবাহগুলো স¤পূর্ণ গলে যেতে আর বেশি সময় লাগবেনা। আবহাওয়া বিজ্ঞানী জেরেমি সাকুন বলেন, আগামী এক বা দুই দশকের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া স¤পন্ন হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :