মুসফিরাহ হাবীব: স্বামীদের ওপর সরকারের নিপীড়নের প্রতিবাদে চীনে মাথা ন্যাড়া করেছেন তাদের স্ত্রীরা। চীনের সবচেয়ে বিশিষ্ট চারজন মানবাধিকার আইনজীবী ও কর্মীর স্ত্রীরা তাদের মাথা মুড়িয়ে এ প্রতিবাদ জানান।
দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে বেইজিংয়ের হংসিকান পিপলস হাই কোর্টের সামনে এ প্রতীকী প্রতিবাদ করেন চার নারী। তারা চীৎকার করে বলেন, “আমরা ন্যাড়া হতে পারি, কিন্তু দেশে বিচারহীনতা চলতে পারে না।”
চীনা শব্দ উফার দুটি অর্থ আছে। একটি হল, মাথা ন্যাড়া করা এবং দ্বিতীয়টি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়া। চার নারী এ শব্দটিকেই প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভিন্নতাবলম্বীদের ওপর ধরপাকড়ের বিষয়টি দেখেও যেন দেখছেন না। আটক হচ্ছে, জেল হচ্ছে শত শত আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মীর।
২০১৫ সালের ৯ জুলাইয়ে চীনে মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযানে প্রতিবাদী ওই চার নারীর স্বামীদেরকেও আটক করা হয়।
আইনজীবী ওয়াং কোয়ানঝাং রাজনৈতিক কর্মী ও উচ্ছেদ অভিযানে ভূমি হারাদের আইনি সুরক্ষায় কাজ করতেন। ২০১৫ সালের ধরপাকড় অভিযানের সময় নিখোঁজ হন তিনি। ২০১৬ সালে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রশক্তি ধ্বংসের অভিযোগ আনা হয়।
ওই সময়ের অভিযানে চীনে ২ শতাধিক আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। যারা মূলত নিপীড়িত মানুষের পক্ষে লড়াই করতেন। তাদের অনেকেরই আর খোঁজ মেলেনি। আবার অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এমনই আটক এক আইনজীবর স্ত্রী লি ওয়েনজু বলেন, কোনো কারণ না জানিয়েই আমার স্বামীকে আটক রাখা হয়েছে। স্বামীর মুক্তির জন্য বহুবার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও আদালতের ভেতরে তাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। স্বামীর সঙ্গেও দেখাও করতে দেওয়া হয়নি তাকে।
লি এর মত একই পরিস্থিতির শিকার অন্যদের স্ত্রীরাও। তাই এর বিরুদ্ধেই এবার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন আটক স্বামীদের স্ত্রীরা।
আপনার মতামত লিখুন :