স্বপ্না দে : পরিবারের সমস্ত লোকের ফাইফরমায়েশ খাটবে, তিন বেলার আহার রান্না করবে, কাপড় কাঁচবে, বাসন ধোবে, ঘরদোর, উঠান ঝাড়– দেবে, মাছ কুটবে, বাটনা বাটবে,বাড়িতে অতিথি আসলে হাসিমুখে আপ্যায়ন করবে, সারাদিন চরকির মতো ঘুরবে। কিন্তু খাবার খাবে সবার শেষে, সকলের খাওয়ার পরে পাতিলে তলায় যা পড়ে থাকবে তা দিয়ে। ভাত খাবে হয়তো পেটপুরে কিন্তু মাছ খাবে সবচয়ে ছোট টুকরা, মাংস খাবে না, খাবে ঝোল। ডিম পারতপক্ষে খাবে না। দিনের বেলা মোটেও বিশ্রাম নেবে না। রাতে শুতে যাবে সবার শেষে। ঘুমের মাঝে বার কয়েক বাচ্চার কাথা বদলে দেবে, কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠবে সবার আগে। খাবার টেবিল সুন্দর করে গুছিয়ে দেবে কিন্তু সে খাবে নিচে বসে।
এরপরও যদি সে একটি সুস্থ সন্তানের স্বাভাবিক জন্ম দিতে না পারে তবে সে কি করে লক্ষ্মীমন্ত বউ হবে? এগুলোই হচ্ছে আমাদের মধ্যবিত্ত ও ভদ্রঘরের উদার মনোভাব সম্পন্ন শ্বশুর বাড়ির অন্দরমহলের নিত্য ঘটনা। তবুও কেন যে উনারা জি বাংলা আর স্টার জলসার নাটক দেখে বলে থাকেন এগুলো অতিরঞ্জন, এসব আমাদের সমাজে কখনো-ই ঘটে না। ঠিক হুবহু হয়তো ঘটে না। কিন্তু নাট্যকার যেহেতু ভিনগ্রহ থেকে আসেন না, নাটকও তেমনি একেবারে অবাস্তব কিছু না। তবে এটাও ঠিক জীবন নাটক হয়ে ওঠে, কিন্তু নাটক কখনো-ই জীবন হয় না।
লেখক : রাজনৈতিক কর্মী
আপনার মতামত লিখুন :