শিরোনাম
◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী 

প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৩৯ রাত
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর খুলনা হানাদার মুক্ত দিবস

শরীফা খাতুন শিউলী, খুলনা: ১৭ ডিসেম্বর খুলনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে হানাদারমুক্ত হয় খুলনা। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের খবরে সারাদেশের ঘরে ঘরে উড়ছে স্বাধীন বাংলার পতাকা। কিন্তু স্বস্তি নেই খুলনার মানুষের মাঝে। তখনও খুলনার শিরোমনিতে যুদ্ধ চলছে।

সাতক্ষীরা ও যশোর থেকে পালিয়ে আসা পাকিস্তানি রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্থানীয় বিহারীরা এখানে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ১৬ ডিসেম্বর রাতেও মিত্রবাহিনীর তুমুল আক্রমণে খুলনা কেঁপেছে ট্যাংক, কামান, বোমা ও গোলাবারুদের আঘাতে।

এসময় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর মুখোমুখি যুদ্ধ হয় খুলনার শিরোমণি, গল্লামারী রেডিও স্টেশন (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা), লায়ন্স স্কুল, বয়রার পোস্ট মাস্টার জেনারেলের কলোনি এলাকা, ৭নম্বর জেটি এলাকা, নূরনগর ওয়াপদা (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ভবন, গোয়ালপাড়া, গোয়ালখালি, দৌলতপুর, টুটপাড়া, নিউ ফায়ার ব্রিগেড স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায়।

১৬ ডিসেম্বর শেষ রাতে খুলনায় প্রবেশ পথে গল্লামারীতে যে যুদ্ধ হয় তাতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা মারাত্মকভাবে আহত হন।
১৭ ডিসেম্বর ভোরে শিপইয়ার্ডের কাছে রূপসা নদীতে বটিয়াঘাটা ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি লঞ্চ এসে পৌঁছে। কিন্তু শিপইয়ার্ডের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা পাক সৈন্যরা লঞ্চটির ওপর আক্রমণ চালায় এবং গুলিবর্ষণ করে। মুক্তিবাহিনীও লঞ্চ থেকে নেমে শিপইয়ার্ডের ওপারের ধান ক্ষেতে অবস্থান নিয়ে পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের গুলিবিনিময়ে ১ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত ও ১৬ জন আহত হন। এই যুদ্ধে পাক বাহিনীরও কয়েকজন নিহত ও আহত হয়।

অবশেষে সকল বাঁধা অতিক্রম করে ১৭ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা খুলনা শহরে প্রবেশ করতে শুরু করে। খুলনা সার্কিট হাউস দখল করার পর মেজর জয়নুল আবেদীন ও রহমত উল্লাহ্ দাদু যৌথভাবে সার্কিট হাউসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিযোদ্ধা স ম বাবর আলী, আবুল কালাম আজাদ, রেজাউল করিম, গাজী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ হাদিস পার্কে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। মিত্র বাহিনী খুলনা শহরে প্রবেশ করার ৮ ঘন্টা আগেই হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

৯ম সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিল, ক্যাপ্টেন হুদা, ডাঃ শাজাহান মোস্তফাসহ কয়েকজন খালিশপুরে মিত্রবাহিনীর সদর দপ্তরে যেয়ে জেনারেল দলবীর সিংহের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এরপর পাক বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার হায়াত আলী খান খবর দেন যে তিনি তার বাহিনী নিয়ে আত্মসমর্পণ করতে সম্মত হয়েছেন। আত্মসমর্পণের যাবতীয় বিষয় আলাপ-আলোচনা শেষে ব্রিগেডিয়ার হায়াত তার ব্রিগেড মেজর ফিরোজকে বলেন, ‘সব সৈন্যকে অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দাও- যুদ্ধ শেষ’। এরপর খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের দপ্তর থেকে ব্রিগেডিয়ার হায়াত খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হন। পাক বাহিনীর পরাজিত বিধ্বস্ত সৈন্যরাও সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে রওনা হয়। রাস্তায় তখন আবাল-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষের ঢল নেমেছে।

সবাই ছুটছেন খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের দিকে। ১৭ ডিসেম্বর সার্কিট হাউস ময়দানে পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের পর উল্লাসে আর আনন্দে ফেটে পড়ে মুক্তিকামী জনতা। খুলনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল পাক বাহিনী দখল মুক্ত করে খুলনা শহর শত্রু মুক্ত করার জন্য মুক্তিবাহিনী কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে শহরে দিকে চলে আসে। আর এই আসার জন্য এবং শিরোমনি এলাকায় সমুখ যুদ্ধের কারনে ১৭ ডিসেম্বর খুলনা হানাদার মুক্ত হয়।

এদিকে, সোমবার খুলনা মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীতে বিজয় র‌্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন অংশগ্রহণ করবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়