সমীরণ রায় : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। আর কথার ফুল ঝুড়ি ঝাড়ছেন। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। পাশাপাশি জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলের ওয়াদা দিচ্ছেন। আর ক্ষমতাসীনদের প্রতিদ্বন্দ্বি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা সরকারের বিপক্ষে প্রাচরণা চালাচ্ছেন। যার যার অবস্থান থেকে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন।
তবে বিপত্তি দেখা দিয়েছে অন্য জায়গায়। ১৪ ডিসেম্বর ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। জনতার ঢল নেমেছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌদে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন। এমনকি তাঁর দল গণফোরামের অনেক নেতার সঙ্গে আমার ভালো চেনা-জানা রয়েছে। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এখন আমাকে চিনতে পারবেন কি জানি না। এর বিশেষ কারণ আমি যে ড. কামাল হোসেনকে চিনতাম। আজ তিনি সেই অবস্থানে নেই।
আমি একজন ছাপোষা সাংবাদিক। সারাদিন খাটি বিনিময়ে মাস শেষে কিছু টাকা পাই। তা দিয়ে সংসার চালাই। তবে কারও কাছ থেকে হাত পেতে বা কোনো দল বা গোষ্ঠির পক্ষে লেখা বা বলার জন্য টাকা নিয়েছি বলে মনে পড়ে না। কিন্তু ড. কামাল হোসেনকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমার এক সহকর্মী জামায়াত ইস্যুতে প্রশ্ন করায় তিনি ক্ষেপে যান। এমনকি ‘খামোশ’, ‘কতটাকা খেয়েছো’, ‘মনে রাখব, চিনে রাখলাম’ এমন হুমকি দিয়েছেন। ড. কামাল হোসেনের খামোশ শব্দটা শুনে মনে হয়েছিল, তিনি যাত্রার মঞ্চে। কারণ খুব ছোট বেলা থেকেই এগ্রাম ওগ্রামে যাত্রা দেখতাম। তাই শব্দটির সঙ্গে পরিচয় ছোট বেলা থেকেই। যদিও পরে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি যে জ্ঞাণী তা আবারও প্রমাণ করেলেন।
জাতির সামনে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভিন্ন। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ড. কামাল হোসেন দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। কিন্তু তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট করেছেন, ওই জোটে জামায়াত ইসলাম রয়েছে। যদিও জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। তারপরেও জামায়াতের ২৫ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের নেতৃত্ব কিভাবে ড. কামাল হোসেন দেন। শুধু তাই নয়, ড. কামাল হোসেন ৭২’র সংবিধান প্রণেতার মধ্যে অন্যতম ছিলেন।
তিনি সারাজীবন অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মুক্তিযুদ্ধ, দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। সমাজতন্ত্রের কথা বলেছেন। তাহলে তিনি কিভাবে যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে হাত মেলালেন। নাকি তিনি নীতিভ্রষ্ঠ ও আদর্শচ্যুত হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :