আমিনুল ইসলাম : ৪৭তম বিজয় দিবস উদযাপনে পুরোপুরি প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ। জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে প্রায় পনের দিন ধরে চলছে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ। বর্ণিল ফুলের চারা রোপন ও রং তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পুরো স্মৃতিসৌধ । লাল, নীল, হলুদ বাতির ঝলকানিতে রাতের আকাশেও জানান দিচ্ছে বিজয়ের স্বাদ। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য সৌধ এলাকায় সিসিটিভি স্থাপনের কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌধ কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬-ই ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতি পরাধীনতার শেকল ভেঙে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয়। স্বকীয় স্বত্তায় আত্মপরিচিতি পায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও লীলাভূমির ভূখণ্ড বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র। প্রতিবছর ১৬-ই ডিসেম্বর এই দিনটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে পুরো বাঙালি জাতি।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের কর্মচারীরা জানায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে গত পনের দিন ধরে তারা গণপূর্ত বিভাগের ৬৫ জনসহ বহিরাগত আরো ৫০জন কর্মচারী সৌধ এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করছেন। এলক্ষে সৌধ স্তম্ভসহ পুরো এলাকা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। শহীদ বেদী থেকে প্রধান ফটক পর্যন্ত পায়ে হাঁটার লাল ইটের হেরিং বন্ড পথকে লাল ও সাদা রঙের আঁচরে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়েছে। সৌধ প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে রোপন করা হয়েছে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনীসহ বাহারি ফুল গাছের চারা। পাশাপাশি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পরিচর্যা শেষে লেকগুলোতে লাগানো হয়েছে লাল পদ্ম । বিভিন্ন শোভা বর্ধনকারী গাছ ও ঘাস ছেঁটে ফেলাসহ আলোকবাতি স্থাপনের কাজও ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে। আমিনবাজার থেকে নবীনগর পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় পাশে রংতুলির আচড়ে ভিন্ন রূপ নিয়েছে পুরো সাভার।
সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, সৌধ এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রায় শতাধিক কর্মী দিন রাত কাজ করে স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত করে রেখেছেন। এরইমধ্যে মরিচবাতিসহ আনুষাঙ্গিক কাজগুলো শেষ হয়েছে। সবমিলিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন করতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এখন প্রস্তুত।
তিনি জানান, এর আগে ৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ১৬-ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সৌধ এলাকা সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান জানান, সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কূটনৈতিকসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে ।
প্রতি বছরই মাহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং জনসাধারনের আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। এ ব্যাপারে পর্যবেক্ষণের জন্য সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। গত কয়েক দিন ধরে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান
আপনার মতামত লিখুন :