মো. ইউসুফ আলী বাচ্চু: মহাজোট বা জাতীয় পার্টিতে কোনো দ্বন্দ্ব বিভক্তি নেই। জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ দেশের স্বার্থে কাজ করছে। সেখানে ব্যক্তি বা দলীয় কোনো স্বার্থের কোনো স্থান নেই। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা)'র ইশতেহার ঘোষণার সময় এসব কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যানের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৮টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর ও রাজধানীর প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকর ইশতেহারে প্রধান্য পাচ্ছে। জাতীয়পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নির্দেশে পার্টির ইশতেহার তৈরি করা হয়।
সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, ইশতেহার তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ইশতেহারে রয়েছে, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার ও পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, কৃষি উপকরণের ওপর কর-শুল্ক মওকুফ, সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ সরবরাহ, সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়।
নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করে আনুপাতিক ভোটের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনের বিধান করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেওয়া, উপজেলা আদালত ও পারিবারিক আদালতসহ পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা চালু করা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকবে ইশতেহারে। সরকার গঠনের এক বছরের মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করে দেওয়া হবে। কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে সার, ডিজেল, কীটনাশক সরবরাহ করা হবে। কৃষি উপকরণের ওপর কর-শুল্ক মওকুফ ও সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ সরবরাহ করা হবে। সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি নির্মূল করা হবে। গ্যাস ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি না করা, সারা দেশে পর্যায়ক্রমে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে । এ ছাড়া ফসলি জমি নষ্ট করে কোনো স্থাপনা বা আসাসিক এলাকা গড়ে তোলা আইন করে বন্ধ করা, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা, শিক্ষা পদ্ধতি সংশোধনের মাধ্যমে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করা ও সুলভ মূল্যে শিক্ষা সামগ্রী সরবরাহ, ইউনিয়নভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র কার্যকর করে সেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করে সেবা খাত উন্নত করা। হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক এবং জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রাস্তাঘাট সংস্কার এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে কমপক্ষে ৫০ ভাগ প্রশস্ত করা হবে। গুচ্ছগ্রাম ও পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। পল্লী রেশনিং পদ্ধতি চালু, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে হাওলাদার বলেন, তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের ধারণাকে আমরা মাথায় রেখে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করছি। আমরা সরকারে যেতে পারলে ইশতেহার অনুযায়ী কাজ করব। তাছাড়া ইশতেহারে এইচ এম এরশাদের শাসনামলের উন্নয়ন চিত্রও তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
‘শান্তির জন্য পরিবর্তন-পরিবর্তনের জন্য জাতীয় পার্টি’-এ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রর্তনের ব্যবস্থা থাকবে।
আপনার মতামত লিখুন :