শিরোনাম
◈ সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ২ ◈ থাইল্যান্ডের রাজা-রাণীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় ◈ শিক্ষক নিয়োগ: ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫ ◈ বিদ্যুৎ-গ্যাস কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র ছাড়া ঋণ মিলবে না ◈ রোববার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  ◈ নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি ◈ উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হতে পারে: সিইসি ◈ ভারতের রপ্তানি করা খাদ্যদ্রব্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পেয়েছে ইইউ ◈ ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা বিলে জো বাইডেনের স্বাক্ষর

প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৩৩ রাত
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৩৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগের ইতিহাস কি আমরা জানি ?

অধরা হাসান : বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ইতিহাস ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে শুরু করে ২৫ মাচ রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের গণহত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলো। দীর্ঘ ৯ মাস গোটা বাঙালি জাতির ওপর চালিয়েছিলো দুঃসহ নির্যাতন। ডিসেম্বরে বিজয়ের পূর্ব মূহূর্তে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারা পরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য হাজার হাজার শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি এবং সাহিত্যিকদের ওপর বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালায়। তারা চেয়েছিলো গোটা বাঙালি জাতিকে মেধা ও মননে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিলো।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা প্রথম শ্রেণির অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে বাংলাদেশিদের মধ্যে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনীর লোকেরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে।পাকসেনারা অত্যান্ত সুকৌশলে পৈশাচিক কায়দায় এসকল বুদ্ধিজীবীকে নিজ নিজ বাসা এবং কর্মস্থল থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে আসে। অতঃপর নির্মম অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালায় তাঁদের ওপর। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ বাঙালি এ দেশকে রক্ষা করতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিজেদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তারা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে ছিনিয়ে এনেছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকা- ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বর ঘটনা, যা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষকে স্তম্ভিত করেছিলো। পাকিস্তানবাহিনী ও তাদের এ দেশেীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই তাঁদের নিকট আত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনের লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের লাশজুড়ে ছিলো আঘাতের চিহ্ন; চোখ, মুখ-হাত-পা বাঁধা, কারো কারো শরীরে একাধিক গুলি, অনেককে হত্যা করা হয়েছিলো ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে। লাশের ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত পর্যন্ত করতে পারেননি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। বর্তমান ঢাকার মিরপুরে স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত।

বর্তমান প্রজন্মের উচিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে জানা। আমরা অনেকে এখনো জানি না ১৪ ডিসেম্বর তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের ভয়াবহ ইতিহাস। যারা জীবন দিয়ে এদেশকে স্বাধীন করে গেছেন, তরুণ প্রজন্মের পক্ষ থেকে সেসকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবীর প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা। দেশের স্বাধীনতারক্ষায় তরুণপ্রজন্মের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের মনে রাখা উচিত, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমার প্রিয় জন্মভূমি, তোমার বুকজুড়ে বৃত্তের মাঝে যে লাল রং, তা যেন উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। আমি আমার কপালে যে লাল রঙের টিপ পরি, তাতে লেখা আছে আমার মায়ের নাম। আমার প্রিয় মাতৃভূমির নাম।

লেখক : কবি ও নাট্যকর্মী

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়