শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৫৩ রাত
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৩:৫৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডাকছে সুরমা আসছে মোমেন

মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু, স্টকহোম থেকে : বেশ অনেকদিন আগে বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী এম এ মুহিতের সাথে অর্থমন্ত্রণালয়ে একটি সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কথা হয়। সেসময় দেশের মিডিয়া, আওয়ামী লীগের দুই একজন মন্ত্রী, কয়েকজন জাতীয় সংসদ সদস্য মিলে তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন। আমি তখন আমার একটি লেখায় উল্লেখ করেছিলাম, যে যাই বলুক না কেনো তিনি তার পদে মেয়াদকাল পর্যন্ত বহাল থাকবেন। বাস্তবে হয়েছেও তাই। এম এ মুহিত তার মেয়াদ শেষ করেই এখন এই দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মন্ত্রী সভায় মুহিতের গুরুত্ব¡ কতোটুকু, তা তিনি ভালো করেই জানেন ও বুঝেন। এই কারণেই সেদিন যেসকল ব্যক্তি তার পদত্যাগের হুংকার তুলেছিলেন, তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি প্রধানমন্ত্রী। মুহিতের ভিতরে সবচেয়ে বড় যে গুণটি আছে, তা হলো সততা। তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন ব্যক্তি।

সেই বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন ব্যক্তি এম এ মুহিত এখন বার্ধক্যের কারণে নিজেই মন্ত্রিত্ব থেকে সরে আসাতে এবারের নির্বাচনে তার নিজস্ব নির্বাচনী আসন সিলেট-১ থেকে অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রশ্ন আসে, যেখানে এম এ মুহিত বারবার প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন, সেখানে কে পাবে এবার আওয়ামী লীগের টিকেট? শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কমিটি যোগ্যতা ও সততার ভিত্তিতে অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই ডঃ এ কে আব্দুল মোমেনকে করেছে প্রার্থী। তিনি অর্থমন্ত্রীর ছোট ভাই, এই পরিচয়ের কারণে আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেয়নি। ডক্টর মোমেন সম্পূর্ণ নিজস্ব যোগ্যতার ভিত্তিতে এই মনোনয়ন পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ডক্টর মোমেন একজন পরিচিত ব্যক্তি।

শিক্ষাগত যোগ্যতা, বংশগত পরিচয় ও একজন পেশাদার কূটনৈতিক হিসেবে তিনি সকলের কাছে সুপরিচিত। সেই বাহাত্তর সাল থেকেই ব্যক্তিগতভাবে ডক্টর মোমেনকে আমি চিনি। ঢাকার সোবহানবাগ কলোনিতে বড় বোন প্রখ্যাত স্ত্রী রোগ চিকিৎসক ডাক্তার শায়লা খাতুনের বাসায় তার আগমন ছিলো। আমরাও তখন একই কলোনিতে থাকতাম। তিনি সেসময় বঙ্গবন্ধু সরকারের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর ব্যক্তিগত সচিব ছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তীতে বছর খানেক ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতিতে সক্রিয় থাকাকালে জেনারেল জিয়ার সামরিক আইনকে এড়িয়ে আমি বাংলাদেশ ছেড়ে আসতে বাধ্য হই। পরবর্তীতে ডক্টর এ. কে আব্দুল মোমেনের সাথে আমার দ্বিতীয়বার লন্ডনে দেখা হয়। তখন তিনি সম্ভবত বোস্টন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করতেন। আমার সাথে ডক্টর মোমেনের এটাই সর্বশেষ দেখা। তবে তার গুণাগুণের প্রশংসা করে তাকে ছোট করতে চাই না। তিনি সত্যি খুব অমায়িক। চায়ের টেবিলে আলাপ আলোচনা ও হাসিঠাট্টায় তার তুলনা হয় না।

ডক্টর মোমেনের আরেক বড় ভাই মবিনের সাথে লন্ডন ও ঢাকায় দেখা হয়েছে অনেকবার। তিনি বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ঢাকায় জালালাবাদ সমিতির সভাপতি। সুতরাং এই পরিবারকে আমার খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে বার বার। কথায় বলে নয়নে নয়ন চিনে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সিলেট-১ আসনে একজন সঠিক ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রার্থী করেছে এব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয়।

শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক দিয়ে তার পেছনে রয়েছে এক বিশাল ভা-ার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বি. এ (অনার্স), এম. এ, এল. এল. বি পাশ করেন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এম.পি.এ। এছাড়াও তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থনীতিতে পি. এইচ. ডি করেন। শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে ড. এ. কে আব্দুল মোমেনকে জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োগ দেন। তিনি তার এই দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করে পরবর্তীতে ঢাকায় ফিরে আসেন। ডক্টর মোমেন বর্তমানে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগ এই যোগ্য ব্যক্তিকে তার যোগ্যতার উপর নির্ভর করেই আসন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ আসন সিলেট-১ থেকে মনোনীত করেছে।

ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ কৃপা ও জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে নমিনেশন পেয়েছি। আমি আপনাদের দোয়া, সাহায্য, সমর্থন প্রার্থনা করি। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে সমুুন্নত রাখুন।

ইতোমধ্যে তিনি তার নির্বাচনী প্রচারে সিলেটের উন্নতির জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। শ্রীহট্ট, জালালাবাদ ও সিলেটÑ তিন নামে পরিচিত এই শহরের বাসিন্দারা সবসময় এই আসনে যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। এবারেও তার কোনো ব্যতিক্রম করবে না বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ বিপক্ষ প্রার্থীরা কোনোদিক থেকেই তার সমতুল্য নয়। প্রার্থী হিসেবে তিনি সব দিক থেকেই সর্বেসর্বা।

এখন পর্যন্ত নির্বাচনী অনুসন্ধানে যতটুকু অনুমান করা যায়, দেশের বেশিরভাগ জনগণ সরকার পরিবর্তনের পক্ষে নয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়নের ধারাকে তারা ধরে রাখতে আগ্রহী। দুর্নীতির দায়ে কারাদ-প্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়া ও লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করুক, জনগণ তা চায় না। চায় শুধু বিএনপি জামায়াত ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি। ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের অপপ্রচারে জনগণ কর্ণপাত করবেন না।

সুতরাং আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের ধারাকে ধরে রাখার লক্ষে আবারো ক্ষমতায় আসবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। আর এই উন্নয়নের লক্ষেই সুরমা নদীর তীরে বসবাসরত সিলেটবাসী ড. এ. কে আব্দুল মোমেনকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সরকারে আব্দুল মোমেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পদ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটবাসী আশাকরি জেনে শুনে বিষ পান করবে না। মোমেনের বিজয় এনে দিতে পারে সিলেটের এক বিশাল উন্নয়নের ভা-ার। তাইতো ডাকছে সুরমা আসছে মোমেন।

লেখক সুইডিশ লেফট পার্টি সেন্ট্রাল কমিটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়