রমজান আলী : বর্তমানে ব্যাংক খাতের বিবরণ দেখলেই বুঝা যাবে, ব্যাংক খাতে কোন ধরণের অরাজকতা নেই। দেশের অর্থনৈতিক খাতে বিশাল ভূমিকা রাখছে ব্যাংক খাত। এছাড়া দশ বছরে অনেক উন্নয়ন হয়েছে ব্যাংকিং খাতে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম।
বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক ‘মিট দ্য প্রেসে’ এসব কথা বলেন, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। মিট দ্য প্রেস আয়োজন করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।
এতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা বলেন, মুদ্রা ও আর্থিক বাজার সংস্কার, আর্থিক খাতে ডিজিটাইজেশন আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও ডিজিটাইজেশন আনা হয়েছে। পুরো ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাইজেশন আনা হয়েছে। এর মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা, বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ, বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম, ইলেক্ট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক, আরটিজিএস, ই-কমার্স, এম কমার্স, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা, অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে, বিজনেস প্রোসেস আউটসোর্সিং সেবা, ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ। ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো সিআইবি সেবা অনলাইন করা হয়েছে। জালিয়াতি রোধে গড়ে তোলা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক ড্যাশবোর্ড। এছাড়া আর্থিক গ্রামীণ জনসাধারণকে আর্থিক সেবায় আনতে মোবাইল ব্যাংকিং, স্কুল ব্যাংকিং ও এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
তারা আরো বলেন, সরকারের আর্থিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংকুলানধর্মী ও অন্তর্ভূক্তিমূলক মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে আসছে। এর ফলে বিগত অর্থবছরগুলোতে একদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ সহনীয় মাত্রার মধ্যে সীমিত রাখা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, প্রকৃত দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার সাত শতাংশের ঘর অতিক্রম করে বর্তমানে প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছানোর পর্যায়ে রয়েছে।
বক্তরা আরো বলেন, এক সময় ব্যাংকিং খাতে ৯ দশমকি ৬১ শতাংশ সেবা বিনামূল্যে দেয়া হতো। বর্তমানে ৬৬ শতাংশ সেবা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। বর্তমানে স্কুল ব্যাংকিং, ১০ টাকার হিসাব খোলা সব ক্ষেত্রের আমরা সফল। যার কারণে অর্থনীতি উন্নয়নে ব্যাংকের রোল মডেল পালন করছে।
তারা আরো বলেন, ব্যাংকিং খাতে ঋণ বিতরণের ঝুঁকি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের সক্ষমতা কতটুকু আছে এটাই দেখার বিষয়। আমরা যদি ঝুঁকিপূর্ণ ঋণকে (ছোট, মাঝারি ও বড়) তিন ভাগে ভাগ করি তাহলে দেখা যাবে। বর্তমানে ছোট আকারের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ মোকাবেলায় দেশের সবগুলো ব্যাংকের সক্ষমতা রয়েছে। আর মাঝারি আকারের ঝুঁকি মোকাবেলায় সক্ষম ৭০ শতাংশ ব্যাংক। তবে বড় ঝুঁকির ক্ষেত্রে সবাই সক্ষম নয়।
অনুষ্ঠানে এবিবির সভাপতি ঢাকা ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘মিট দ্য প্রেসে’ ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ব্যাংক এশিয়ার এমডি মোহাম্মদ আরফান আলী, সোনালী ব্যাংকের এমডি ও সিইও ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ, সিটি ব্যাংকের এমডি সোহেল আর কে হোসাইন, এবিবির সাবেক সভাপতি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি আনিস এ খান, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদসহ বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীরা। সম্পাদনা: শাহীন চৌধুরী।
আপনার মতামত লিখুন :