শিরোনাম
◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত ◈ সরকার চোরাবালির ওপর দাঁড়িয়ে, পতন অনিবার্য: রিজভী  ◈ সরকারের বিরুদ্ধে অবিরাম নালিশের রাজনীতি করছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ বুশরা বিবিকে ‘টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো খাবার খাওয়ানোর অভিযোগ ইমরানের ◈ গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৫:০৮ সকাল
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৫:০৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তেলা মাথায় ঢালো তেল

মোহাম্মদ আবু নোমান : গ্রামগঞ্জে একটি কথা আলোচনায় থাকেÑ ‘যারা খেয়েছে তারা আবার খাও, আর যারা না খেয়েছে তারা না খেয়ে থাকো।’ অন্যভাবেও বলা হয়Ñ ‘যে খাইছো সে আরো খাও, আর যে না খাইছো সে চলে যাও।’ একজনের নাকে-মুখে দিয়ে খাবার দেয়া হচ্ছেÑ আর অন্য দিকে শতজন না খেয়ে ধুক্ছে। সে দিকে কারো কোন খবর নেই। বড়রা বলতেনÑ ‘তেলা মাথায় ঢালো তেল, ন্যারা মাথায় ভাঙো বেল’।

একের পর এক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন ও পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। নির্বাচন সামনে রেখে সম্প্রতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ সরল সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তা জানিয়েছে। ২০১৫ সালে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির পর কখনো শূন্যপদ ছাড়াই পদোন্নতি, বিনা সুদে গাড়ি কেনার ব্যবস্থা, স্বল্প সুদে ফ্ল্যাট কেনা বা বাড়ি করার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করেছে সরকার।

সরকারি চাকরিদের প্রতি কোনো বিরাগ বা বিদ্বেষ থেকে নয়, প্রশ্ন হলো- সুযোগ-সুবিধা সমভাবে সবার জন্য প্রতিষ্ঠা করা উচিত। সরকার যে উদ্দেশ্যেই বেতন বাড়াক তা নিয়ে প্রশ্ন নয়। কিন্তু কেউ বলতে পারবে কিÑ এতো সুবিধার পরও বাংলাদেশে সরকারি এমন কোন প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে জনগণ ঘুষ, অনিয়ম বা হয়রানি ছাড়া সেবা পাচ্ছে? বেসরকারি চাকুরেরা যদি স্বল্প বেতনে ঘুষ-দুর্নীতি ছাড়া চলতে পারেন, তাহলে সরকারি চাকরিজীবীরা কেন পারছেন না? বেতন, সুবিধা বাড়ার পর দেশের সর্বসাধারণ যদি দুর্নীতিমুক্ত সরকারি প্রশাসন পেতো তাও গর্ব করার মতো হতো।

বেতন বৃদ্ধির কারণে সরকারি কর্মচারীরা খুশিই ছিলেন। তার ওপর শেষ সময়ে এসে তাদের আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। নির্বাচনের আগে বিশেষত প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে বারতি ‘নিমক’ দানের কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা সেটাই প্রশ্ন?

এছাড়াও আগে শুধু যুগ্ম সচিব পর্যন্ত কর্মকর্তারা গাড়ির সুবিধা পেতেন। এখন উপসচিবেরাও গাড়ির জন্য সরকার থেকে সুদমুক্ত ৩০ লাখ টাকা করে ঋণ পাচ্ছেন। জানা গেছে, গাড়ি রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য উপ-সচিবদের সমান ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। বর্তমানে ব্যাংকের জিএমদের এ বাবদ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের জিএম পর্যায়ে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৪৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে।সম্প্রতি সরকার বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণসুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করছে। গত সেপ্টেম্বরে এর সঙ্গে আরেকটি সুবিধা যুক্ত করা হয়। চাকরিরত অবস্থায় কোনো সরকারি কর্মচারী মারা গেলে ওই কর্মচারীর উত্তরাধিকারীর কাছ থেকে সরকার আর ঋণের টাকার আসল, সুদ ও দ-সুদ কিছুই ফেরত নেবে না। কোনো কর্মচারী পঙ্গু হয়ে অবসরে গেলেও একই সুবিধা পাবেন। আবার যারা পেনশনের পুরো টাকা তুলে নিয়েছেন, অবসরের তারিখ থেকে ১৫ বছর পার হলে তাদেরও মাসিক ভিত্তিতে আবার পেনশন দেবে সরকার। শুধু তা-ই নয়, প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্টও (বার্ষিক বৃদ্ধি) পাবেন তারা। প্রবীণ নাগরিকদের এই সুবিধাটিকে অবশ্য ইতিবাচক এতো কারো কোনো সংশয় নেই।

বেসরকারি মিল, ফ্যাক্টরি, শিল্প-কারখানা, গার্মেন্টস, কোম্পানির শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের বিরামহীন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি, পরিশ্রম ও ঘামঝড়া শ্রমের বিনিময় সরকারের অর্থনীতির চাকা সচল থাকে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতার সিংহভাগ আসে যেসব খাত থেকে, তাদের জন্য দেশের সংবিধানে কোনো আইন ও বাজেট আছে কী?  লেখক : কলামিস্ট

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়