মাহবুব চৌধুরী
অরিত্রীর আত্মহত্যা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলো আবারও দেখিয়ে দিলো। অকালে এইভাবে তার করুণ মৃত্যু তার বাবা- মার অসহনীয় মর্ম বেদনার সাথে বিবেকবান সবাইকে মর্মাহত করেছে। অহরহ এইরূপ ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিছু দিন আগে চৈতি নামে একটি মেয়েও একই রকম করুণ ভাবে মৃত্যু বরণ করেছে। শুধু ভিকারুননিসা নয় দেশের প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই সুযোগ পেলেই কর্তৃপক্ষ এবং ক্ষমতাশালীরা অসৌজন্যমূলক, অসম্মানজনক ব্যবহার করছেন। কিছু ব্যতিক্রম বাদে।
ঘটে যাওয়া হাজার ঘটনার মাঝে দু- একটি ঘটনা সময় ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হঠাৎ করে সামনে আসছে- সুস্থ বিচার বুদ্ধি নিয়ে স্থায়ীভাবে এই বিষয়গুলো সমাধানের কোনো প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। হুজুগ নির্ভর সমাধানেই যেন সব কিছু চলছে। শ্যামল কান্তি ভক্তের ঘটনাটা দেখুন, হুজুগে- মানুষ নিজ দায়িত্বে কান ধরে উঠবস করেই এক ধরনের তৃপ্তির সমাধান খুঁজে পেলেন। এ সমাধানটাও আবার সবার জন্য জুটছে না, শুধু ক্ষেত্র বিশেষ- মনমতো কিছু মানুষের জন্য।
চাই একটি সুন্দর সিস্টেমের স্থায়ী সমাধান। সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন, দুর্নীতিহীন, মার্জিত, মানবিক সিস্টেমই তা দিতে পারে। বিচারের নামে যেনতেন - গতানুগতিক পাবলিক আবেগ, ইম্প্রেশন, হুজুগ নির্ভর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হবে আর একটি অনিয়ম, অবিচার! এটি কাউকে বলির পাঁঠা বানিয়ে - দায়িত্ব সারা। হুজুগে অপবাদ থেকে এখনও আমাদের মুক্তি মেলেনি! আবেগকে একবার হুজুগের মাঝে ফেলতে পারলেই হলো - বাকি কাজ আপনা আপনিই চলে। গণধোলাই, হাটুরে মার, বিচারের নামে আর একটি অবিচার। ঘটনার প্রধান কারণ এবং প্রতিকার খুঁজতে হবে।
ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে যেয়ে বিষয়টি যেন আমরা লক্ষ রাখি। শিক্ষক বিরোধী নেগেটিভ প্রচার হওয়া ঠিক না। নিয়ম,কানুন, শৃঙ্খলা রাখতে মানবিক সীমায় শাসন করবার অধিকার তাদের থাকা উচিত। শিক্ষকদেও নৈতিক শক্তিটা শিক্ষা ক্ষেত্রে জরুরি। বিষয়টি লক্ষ রাখতে হবে। হুজুগে বিচারেই যেন শেষমেশ এই ঘটনার সমাপ্তি না হয়!
আপনার মতামত লিখুন :