সুজন কৈরী : সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েই সমাজে আত্মহত্যার প্রবণতারোধ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি সমাজে বাস করছি যেখানে মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা নেই। এই কারণে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি হচ্ছে, যা আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে হতাশাচ্ছন্নদের। আমরা মানুষের প্রতি সহমর্মিতার মাধ্যমে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে আত্মহত্যার এ প্রবণতা প্রতিরোধ করা যাবে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘স্টপ সুইসাইড, মানুষ বাঁচুক ভালোবাসায়’ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তানজীম উদ্দিন খান বলেন, এক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় নয় জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পদ্ধতির পড়াশোনা কাঠামোগত চাপ তৈরি করছে। শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব রয়েছে। তাদের উচিত আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করা। যদি সেটি কার্যকরভাবে সম্ভব হয়, তাহলে এ ধরনের ঘটনা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সেলিম হোসেন বলেন, আত্মহত্যা একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এর পেছনে রাষ্ট্রের দর্শন, অর্থনীতি, রাজনীতি জড়িত।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রে যখন বেকারত্বের হার বেড়ে যায়, অবিচার হয়- তখন এই প্রবণতা বাড়ে। আমরা যদি এর দায়িত্ব না নিই, আগামীতে এ হার আরও বাড়বে। যারা হতাশায় আছে তাদেরকে বোঝাতে হবে জীবন অনেক সুন্দর। একবার ব্যর্থ হওয়া মানে সব শেষ নয়। জীবনে অনেক সুযোগ আসবে।
গণমাধ্যমকর্মী ইফতেখার উদ্দীন বলেন, আমাদের আত্মহত্যার সংবাদ প্রচারে আরও সতর্ক হতে হবে। বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে চটকদারভাবে আত্মহত্যার সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। আত্মহত্যার পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হবে, এটা কোমলমতি শিশুদের মাঝে এক ধরনের উৎসাহ কাজ করছে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহাদাত রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মার্কেটিং বিভাগের আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থী আফিয়া সারিকার বোন সুমাইয়া সারিকা, আত্মহত্যা করা অর্চির বন্ধু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাত্তন শিক্ষার্থী আহমেদ ইরতিজা প্রমুখ।
কর্মসূচি শেষে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :