শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৯:০৯ সকাল
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৯:০৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সরকারের পক্ষে ইসির ভূমিকা নজিরবিহীন

ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের পক্ষে ইসির নজিরবিহীন পক্ষপাতিত্ব ভোটারদের হতাশ ও ক্ষিপ্ত করে তুলছে। নির্বাচন সামনে রেখে দেশব্যাপী গ্রেফতারের মহোৎসব চলছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম ও নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে তাদের ভূমিকা ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থের পক্ষে বলে জনশ্র“তি রয়েছে। তাদের কাজকর্মের মধ্যে এক ধরনের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি টান, আনুকূল্য ও তাদের স্বার্থের পক্ষে কাজ করছেন- এমন কথা ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম নিয়মিত তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং নির্বাচনের বিভিন্ন ধরনের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব তাদের সিনিয়র একজনকে দেয়া হয়েছে। এ কমিশনারের মাধ্যমে ইসিকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সব ধরনের নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতিদিন সিইসির কাছে বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিভিন্ন নির্দেশনা পাঠানো হয়। সিইসির দফতর থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

অভিযোগ করে রিজভী বলেন, রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণ করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেল স্থাপন করা হয়েছে। ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সেলের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট কাউকে স্বতন্ত্র প্রার্থী না করার বিষয়ে কড়া নির্দেশনা ছিল।

নির্বাচন কমিশনও আপিলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বহালের ক্ষেত্রে ওই নির্দেশনা অনুসরণ করেছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ মোবারক হোসেনকে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচন পরিচালনা সেলের আইন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ভোট কারচুপির জন্য জোন (অঞ্চল) ভাগ করে পুলিশ বিভাগের ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগর, ঢাকা বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি ও এআইজি র‌্যাংকের অফিসারদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুর জোনে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ডিআইজি ও এআইজি পদমর্যাদার অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

খুলনা ও বরিশাল জোনেও একইভাবে অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি এবং সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন পুলিশ সদর দফতরের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট জোনগুলোর বৈঠক সম্পন্ন করেছেন। পুলিশের এই ১২ কর্মকর্তা ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রভিত্তিক আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রের তালিকা, কেন্দ্রভিত্তিক হিন্দু ভোটারদের অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপির অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপির প্রভাবশালীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যালটের বাইরে অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানো হবে; যা থানায় ভোটের আগে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। প্রয়োজনমতো ব্যালট বাক্সে ঢোকানো হবে। প্রস্তুত করে রাখা নকল সিলপ্যাড প্রিসাইডিং অফিসারদের সরবরাহ করবে পুলিশ। নির্বাচন কমিশনে মূল সিল প্যাড এবং স্বাক্ষর থাকবে আর বিএনপির পোলিং এজেন্টদের নকল সিলপ্যাড ও স্বাক্ষরে মূল ফলাফল সংবলিত শিট সরবরাহ করা হবে। প্রিসাইডিং অফিসারদের মূল স্বাক্ষরে ফলাফল শিটে ভোট গণনা পরিবর্তন করে রিটার্নিং অফিসারকে প্রেরণ করার নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে রিজভী আরও বলেন, সারা দেশে যারা ভোট গ্রহণ করবেন সেই ডিসি, এসপি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনের নির্দেশনা নির্বাচন কমিশন দেয়নি। উল্টো তাদের পক্ষপাতিত্বের দিকে উসকে দিয়েছে ইসি। নির্বাচন কমিশনে দফায় দফায় ডেকে এনে সেমিনার, প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, সংলাপের নামে বিএনপির প্রার্থীদের হয়রানি করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। অধিকাংশ রিটার্নিং কর্মকর্তা আওয়ামী অনুমোদিত মনোবৃত্তির মাধ্যমে প্রণোদিত।

সিইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সিইসি শব্দটি উচ্চারণ করলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নাম। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে তার ভূমিকা দেশ-বিদেশে নিন্দিত ও কলঙ্কিত। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে কাজী রকিব যে পথে হেঁটেছেন, বর্তমান সিইসিকে এম নুরুল হুদাও যেন সে পথেই চলতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, সেটাকে এক ডিগ্রি বৃদ্ধি করে নৈতিকতার ‘মাথা খেয়ে’ নিজের ভাগ্নেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী করেছেন। তার সঙ্গে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বসে বৈঠকও করছেন।

সরকারি কর্মকর্তাদের বদলি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রশাসনের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, এসপি এমন ৯২ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে তাদের বদলি ও প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক পরিচিতি, কর্মকাণ্ডের তথ্যও দেয়া হয় নির্বাচন কমিশনে। এর মধ্যে মাত্র একজন এসপি (নারায়ণগঞ্জ) বদলি করে সেখানে আরও কট্টর আওয়ামীপন্থী ও বিতর্কিত এসপি হারুনকে পদায়ন করা হয়। অবিলম্বে পক্ষপাতদুষ্ট ৯২ জনকে বদলি করার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ।
সূত্র : যুগান্তর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়