নোয়াখালী প্রতিনিধি : আজ শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) নোয়াখালী মুক্ত দিবস। এই উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেলে জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কে বর্ণাঢ্য র্যালি শেষে পিটিআই সংলগ্ন নোয়াখালী মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের কমান্ডার মোজাম্মেল হক মিলনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান, মমতাজুল করিম বাচ্চু, মোশারফ হোসেন, জি এস কাশেম, অ্যাডভোকেট সারোয়ার-ই-দ্বীন প্রমুখ।
দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় মুক্ত মঞ্চে নৃত্য, গান, মঞ্চ নাটক পরিবেশন করে জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর মুক্তিকামী ছাত্রজনতা পুলিশ ও ইপিআর ফেরত জওয়ানদের সাথে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত নোয়াখালী ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে। পরবর্তীতে পাকবাহিনীর হামলার মুখে মুক্তিযোদ্ধারা টিকতে না পেরে পিছু হটলে নোয়াখালীর নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তানিরা। নোয়াখালী পিটিআই এবং বেগমগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তোলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তাদের সাথে দেশীয় রাজাকাররা মিলে শুরু করে লুটপাট। এরেই মধ্যে নোয়াখালীর অসংখ্য ছাত্রজনতা প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারত থেকে এসে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
কোম্পানীগঞ্জের বামনীর যুদ্ধ, বেগমগঞ্জের বগাদিয়াসহ অসংখ্য যুদ্ধ হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। ওই সময়ে শহীদ হন শত শত মুক্তিযোদ্ধা। শুধুমাত্র সোনাপুরের শ্রীপুরে তারা হত্যা করেছিল শতাধিক ব্যক্তিকে। এ ছাড়া বেগমগঞ্জের চৌরাস্তায়, একই উপজেলার গোপালপুর ও সেনবাগেও গণহত্যায় লিপ্ত ছিল পাকিস্থানিরা। এখনো এসব স্থানে গণকবরের দেখা মেলে। ডিসেম্বরের শুরুতেই নোয়াখালীর প্রত্যন্ত প্রান্তরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের পিছু হটিয়ে দেয়। ৬ ডিসেম্বর দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা বেগমগঞ্জ মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। আর সাত ডিসেম্বর মুক্ত হয় গোটা নোয়াখালী জেলা।
আপনার মতামত লিখুন :