সুজন কৈরী : রাজধানীর উত্তরখান, উত্তরা ও মিরপুর এলাকা থেকে মানব পাচার, সরকারি দপ্তরে চাকুরিসহ বিভিন্ন প্রতারণায় জড়িত প্রতারক চক্রের প্রধানসহ ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। প্রতারণার শিকার কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে চক্রের দলনেতা আসাদুজ্জামান আসাদসহ তাদের আটক করা হয়েছে। আটক চক্রের অন্যরা হলেন মো. ওসমান গাজী (৪৮), সিরাজুল ইসলাম (৫২), মো. টিপু সুলতান (৫৫), লিটন মাহমুদ (৩৫)।
তাদের কাছ থেকে ৩২টি পাসপোর্ট, ৭টি জাল ভিসা, ১টি বিমানের জাল টিকেট, ৩৪ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ১৫টি স্বাক্ষরিত ব্যাংক স্ট্যাম্প, ল্যাপটপ, ২টি কম্পিউটার, কালার প্রিন্টার, ৫টি মোবাইল ফোনসহ চাকরিপ্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর উপঅধিনায়ক মেজর মো. রাকিব উজ্জামান বলেন, এই চক্রের নেতা আসাদুজ্জামান। উত্তরা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে একাধিক অফিস খুলেছেন। প্রতারণার প্রথম কৌশল হিসেবে প্রথম সারির দৈনিক ও ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতেন।
এছাড়া নিজস্ব দালাল চক্রের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের নিজ অফিসে নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে কখনো ট্যুরিস্ট ভিসা, জাল ভিসা, জাল টিকিট, দিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তার কাজ।
তিনি বলেন, চক্রটি জাল ভিসা দিয়ে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে ভুক্তভোগীদের একেকজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। জাল ভিসা তৈরির জন্য চক্রের সহযোগী ওসমান গাজী, টিপু ও লিটন তাকে সহযোগিতা করতো। আর সরকারি চাকরি দেয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের আসাদুজ্জামানের অফিসে আনার জন্য ওসমান, টিপু ও সিরাজ দালাল হিসেবে কাজ করতো।
র্যাব জানায়, আটক ওসমান আলী পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। আল আমিন নামের এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর মাধ্যমে আসাদুজ্জামানের সঙ্গে পরিচিত হন। ওসমান জাল ভিসা প্রস্তুতের কাজ করতেন। গত ৩ বছর ধরে এমন কাজ করছিলেন তিনি। প্রতিটি জাল ভিসা তৈরির জন্য ২০ হাজার টাকা পেতেন। এই পর্যন্ত তিনি ৪০-৫০টি জাল ভিসা তৈরি করেছেন।
আটক টিপু সুলতান বিভিন্ন মার্কেটে ভাসমান ইলেক্ট্রনিক ব্যবসা করার সুবাদে ওসমানের সঙ্গে পরিচয় হয়। লিটনের দোকান থেকে জাল ভিসা ও চাকরির বিভিন্ন নিয়োগ সংগ্রহ করে ওসমানকে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতেন। গত ৩ বছর ধরে এ কাজে জড়িত।
আটক সিরাজুল ইসলাম পেশায় ঘড়ি বিক্রেতা। কাউরাইদ বাজারে ঘড়ি মেরামতের দোকান আছে। ফরিদ নামে একজনের মাধ্যমে ওসমানের সঙ্গে পরিচিত হন তিনি।
লিটন মাহমুদ মিরপুর-১-এর কোঅপারেটিভ মার্কেটের লিটন ডিজাইন হাউজের মালিক। গত ৭ বছর ধরে মিরপুরে ব্যবসা করেছেন। তিনি জাল ভিসা ও ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরির করে সরবরাহ করতেন। সম্পাদনা : রেজাউল
আপনার মতামত লিখুন :