শিরোনাম
◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপ মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১২  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘনের সাজাপ্রাপ্ত মামলায় স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস ◈ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে কর্মজীবী মানুষ ◈ স্বাস্থ্যখাতে নতুন অশনি সংকেত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স: স্বাস্থ্যমন্ত্রী  ◈ কৃষি খাতে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন  বছরে সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ◈ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.১ শতাংশ: এডিবি ◈ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বিজিপির ১৪ সদস্য ◈ ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলার তালিকা প্রকাশ করুন: মির্জা ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত : ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০১:০২ রাত
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০১:০২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তাবলিগ নিয়ে বিতর্কের শেষ কোথায়?

আমিন মুনশি : টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠকে কেন্দ্র করে ১ ডিসেম্বর প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তাবলিগ জামাতের দু’টি পক্ষ। দীর্ঘদিনের মতানৈক্যের জেরে দ্বীনের দাওয়াতি কাজে এখন ঢুকে পড়েছে অশান্তি। উভয়পক্ষই দোষারোপ করছে পরস্পরকে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত জানার চেষ্টা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

‘ক্ষমতার জন্যেই ঘটেছে ন্যক্কারজনক হামলা’

আধিপত্য বিস্তার করতেই টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে নিরীহ মুসুল্লিদের উপর হামলা হয়েছে। ভারতের বিতর্কিত মাওলানা সাদের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছিল। তাদের সাথে অংশ নিয়েছিল শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ পরিচালিত জামিয়া ইকরা মাদরাসার কিছু অতি-উৎসাহী ছাত্র-শিক্ষক। তারা ফেসবুক লাইভে এসেও বিষয়টি বেশ গর্বভরে প্রচার করেছে বলে দাবি করেছেন হাফেজ্জি হুজুর রহ. সেবা সংস্থার মহা-পরিচালক হাফেজ মাওলানা রজীবুল হক।

তিনি বলেন, তাবলীগ জামাত একটি শান্তিপূর্ণ দাওয়াতি আন্দোলন। এখানে উলামায়ে কেরামের পরামর্শক্রমে চলে সব কার্যক্রম। কিন্তু ‘এতায়াতি জামাত’ নাম দিয়ে তাবলীগের এই মোবারক কাজের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে বিপথগামী মাওলানা সাদের এদেশীয় অনুসারীরা। তারা এখানে কর্তৃত্ব কায়েম করতে সংঘাত সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষের কাছে তাবলীগ জামাতের সুনাম বিনষ্ট করেছে।

তিনি আরো বলেন, মারামারি-হানাহানি করা তাবলীগের আদর্শ নয়। মাওলানা সাদের অনুসারীরা যে ন্যক্কারজনক কাজের নমুনা দেখিয়েছে তাতে আমরা বিস্মিত। বেদনাহত। তারা সেদিন আক্রমণ করার জন্যই ইজতেমা ময়দানে গিয়েছিল। তাদের সাথে কোন তাবলীগের মালপত্র ছিলো না; ছিলো লাঠি, চাকু-ছুরি। আমরা সরকারের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায়বিচার চাই।

‘মসজিদ ভাগ করলে অশান্তি আরো বাড়বে’

ইজতেমা ময়দান নিয়ে এরকম নির্মম লড়াই কেউ কামনা করে না। ইসলাম কখনোই এ ধরনের লাঠালাঠি, মারমুখি তাবলিগের কাজ সমর্থন করে না। এটা কখনো তাবলিগের কাজই হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
অপ্রীতিকর এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ‘টঙ্গীর এই নির্মম হতাহতের ঘটনার সঙ্গে যে বা যারাই থাকুক তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ ধরনের জঘন্য অন্যায় ও অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া কখনোই ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখবে না বরং ক্ষতি করবে।

সব পক্ষকে এখন ধৈর্য্য ও সংযম দেখিয়ে সহনশীল হতে হবে। অনেকে মসজিদ ও ইজতেমা মাঠকে ভাগ করে ফেলার কথা বলছেন, আমি মনে করি এতে কোন সমাধান আসবেনা; বরং অশান্তি আরো বাড়বে।

‘মাঠে প্রবেশে বাধা দিয়ে সংঘর্ষের সূচনা করে ওরাই’

গত ৯০ বছর ধরে শান্তি-সম্প্রীতি ও উদারতার দৃষ্টান্ত হিসেবে বিশ্বব্যাপী তাবলিগ জামাত পরিচালিত হয়ে আসছে। দিল্লী নিজামুদ্দীন মারকাজ থেকেই এ মেহনতের সূচনা এবং নিজামুদ্দীন থেকেই এ মেহনত পরিচালিত হয়। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে কিছু মানুষ আলাদা একটি দাবি তোলেন। তারা নিজামুদ্দীন মারকাজের কেন্দ্রীয় মর্যাদা খর্ব করার জন্য ‘আলমী শুরা’ নামে নতুন একটি কমিটির প্রস্তাবনা দেন। সে থেকেই কিছু মানুষ আলাদা চলতে শুরু করেন বলে মন্তব্য করেন কাকরাইল মসজিদের মুকিম মাওলানা আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে তাবলিগ জামাত পরিচালিত হয় ১১ জন শুরা সদস্যের মাধ্যমে। এর মধ্যে ৬ জন নিজামুদ্দীনের সঙ্গে থাকলেও ৫ জন পাকিস্তানের আলমী শুরার পক্ষাবলম্বন করেন। আগামী ১১ জানুয়ারি আমাদের ইজতেমা হওয়ার কথা। তাই মাঠ তৈরির কাজে ময়দানে গেলে সেদিন তারা আমাদেরকে প্রবেশে বাধা দেয়। আমাদের সাথীরা বাহিরে তালিমরত ছিলো। এমতাবস্থায় ভেতর থেকে বৃষ্টির মতো ইটের ঢিল ছুঁড়ে তারাই সংঘর্ষের সূচনা করে। আমরা সবসময় সরকারি নির্দেশনায় সমাধানের জন্য আগ্রহী। কিন্তু তারা তাদের মত আমাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চায়।

‘বিশ্ব ইজতেমাকে বাংলাদেশ থেকে সরানোর চক্রান্ত’

যারা সেদিন সংঘর্ষ করেছে, আলেম-ওলামা, তালিবুল ইলমদেরকে আহত করেছে তারা আসলে দেশের শত্রু। ইসলামের শত্রু। তারা ইজতেমার মাঠ দখলে নিতে চেয়েছিল। অস্ত্র নিয়ে এসে হামলা করে বহু সাথী ভাইকে রক্তাক্ত করেছে। হাত-পা ভেঙেছে। এরা আসলে বাংলাদেশ থেকে বিশ্ব ইজতেমাকে উঠিয়ে দিতে চায় বলে মনে করেন তাবলিগের উলামা পক্ষের প্রতিনিধি ঢাকার মিরপুর-১০ আল ইহসান মাদরাসার পরিচালক মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী।

তিনি বলেন, বিদেশি অপশক্তির হয়ে কাজ করছে পথভ্রষ্ট মাওলানা সাদপন্থীরা। আমরা এই দুরাবস্থা থেকে তাবলিগ জামাতকে মুক্ত করতে চাই। শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়