হ্যাপি আক্তার : প্রতিবছর দেশে গড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করছে। এই সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত চার বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে আত্মহত্যার সংখ্যা ছিলো সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন, মানবিক সমাজ গঠনই পারে আত্মহত্যার প্রবণতা কমিয়ে আনতে। সূত্র : ডিবিসি নিউজ
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সারাদেশে ১১ হাজার ৯৫ জন আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৬ সালে ১০ হাজার ৬০০ জন, ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৫০০ এবং ২০১৪ সালে ১০ হাজার ২০০ জন আত্মহত্যা করেন।
‘আত্মহননের পথ বেছে নেয়া জীবনের কি কোনো সমাধান হতে পারে? এমন প্রশ্ন ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে। সবারই উত্তর, আত্মহত্যা সমাধান নয়।’
তারা জানান, হতাশ মানুষ অনেক কারণেই হয় তাই বলে আত্মহত্যা করাটা কোনো সমাধান হতে পারে না। জীবন অনেক সুন্দর, হতাশা জীবনেরই অংশ। আমরা যদি আমাদের জীবন শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে ফেলি তাহলে তো জীবনের মজাটাই পেলাম না। আমাদের কাছে জীবন হচ্ছে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়া, গান গাওয়া এই সুন্দর মুহুর্তগুলো উপভোগ করা।
কন্ঠশিল্পী ফকির আলমগীর বলেন, এই জীবন অসাধারণ সুন্দর। শিল্পীরাও তাদের গানে গানে বলে গিয়েছেন আজ জীবন খুঁজে পাবি, ছুটে ছুটে আয়। আত্মহত্যা কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না।
বিগত ৪ বছরের হিসেবে ২০১৭ সালে আত্মহত্যার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ৩০ জন স্বেচ্ছায় মৃত্যু বেছে নিয়েছেন। এ বছর শুধু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৩ জনের আত্মহত্যার খবর গণমাধ্যেমে এসেছে। এর মাঝে ৯ জন শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। গেল সোমবার ভিকারুন নিসা নুন কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যা করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ আলোচিত হয় গণমাধ্যেমে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনো-রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমরা যদি সবার সাথে মানবিক আচরণ জরুরী এবং সহানুভুতি দেখাই সমাজ অনেক বেশি আনন্দদায়ক ও সহনীয় হতো। তাহলে আত্মহননের প্রবণতাও কমে আসতো।
সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক নেহাল করিম বলেছেন, শুধু বড় বড় ডিগ্রী থাকলেই একজন মানুষ ভালো চরিত্রের বা মার্জিত স্বভাবের লোক হবে এমনটা নয়। আগামী সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য মানবিক সমাজ গঠনের চর্চাটা আমাদের বাড়ানো উচিত।
আপনার মতামত লিখুন :