শিরোনাম
◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী 

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২১ সকাল
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের মানবিক মূল্য : এক নারীর সংগ্রাম কাহিনী

আসিফুজ্জামান পৃথিল : ১৫ বছর বয়সে সাহিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের দিনই সে তার স্বামীকে প্রথমবারের মতো দেখে। নিজের স্বামীকে প্রথম দেখা সম্পর্কে সাহিয়া হাসতে হাসতে বলছিলো, ‘ সে খুব ভালো স্বামী। আমি ভাগ্যবতী ছিলাম। তবে সে আমার বাবা মার কাছে নিজের দর বাড়িয়েছিলো। তার আসল মূল্যের চাইতে বাজারমূল্য বেশি দেখানো হয়েছিলো।’ কোয়ার্জ

সাহিয়া বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের একজন ভুক্তভোগী। সে বাংলাদেশে এর প্রভাব সম্পর্কে জানায়। বিয়েরপর বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের এক গ্রাম সিংপুরে নিজের শ^শুর বাগিতে যায়। বিয়ের পরপরই সে প্রথমবারের মতো নিজের বাড়িকে নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে দেখে। সাহিয়া জানায়, ‘একদিন আমরা আমাদের মেঝেতেফাটল দেখতে পাই। এরপর আমাদের জমি ধীরে ধীরে পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফাটল বড় হকে থাকে।’

নদীভাঙন খুব ধীর একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা যেন দ্রুততর হচ্ছে। ইদানিংকালে বড় বড় ভূখন্ড দ্রুত নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। সাহিয়ার সাথেও একই ঘটনা ঘটে। সে তার বাড়ি হারায়। এরপর কিছুসময়ের জন্য তারা তার স্বাামীর চাচার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সে চোখের সামনে নিজ বাড়ি হারাতে দেখেছে। এরপর তাদের আশ্রয়দাতার বাড়িটিও নদীতে বিলিন হয়ে যায়। এরপর তারা এক পরিত্যাক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তারা এখনও নদী তীরেই অবস্থান করছে।

সাহিয়ার স্বামী একজন মৎসজীবি। তারা নদী থেকে আহরিত মাছের উপরই তারা নির্ভরশীল ছিলো। অন্তত যতনি না পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায। সাহিয়া জানায়, ‘আমার স্বামী মাছ ধরতো। কিন্তু মাছের বিভিন্ন রোগ দেখা দেওয়ায় তাকে এ কাজ ছাড়তে হয়। আজকাল নদীতে মাছ খুব কম। এককালে এখানে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ছিলো। কিন্তু যখন রোগের কারণে মাছ মরতে শুরু করলো, মানুষ তখন তা খাওয়া ছেড়ে দিলো। বড় এবং ভালো সব মাছ হারিয়ে গেলো।’ সাহিয়ার পরিবারকে এ কারণে তাদের পারিবারিক পেশা ত্যঅগ করে ভিন্ন পেশা নিতে হয়েছে। তারা মৌসুমীভাবে অভিবাসনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং নদীর উজানে গিয়ে আলিপুরে এক ইটের ভাটায় কাজ করা শুরু করে। এখন তারা প্রতি বর্ষা মৌসুমে ৬ মাসের জন্য সিংপুর ত্যাগ করে কারণ এ সময় পুরো গ্রামটাই বন্যার পানিতে ডুবে যায়।

সাহিয়া বলে, ‘যে মানুষটা আমাদের কাজ দিয়েছে সে কিছু অর্থ দেয়ঢ। এ দিয়েই আমরা বাকি ৬ মাস সিংপুরে টিকে থাকি। আমাদের সপ্তাহ ভিত্তিতে অর্থ দেওয়া হয়। সপ্তাহে আমাদের আয় ২ থেকে ৪ হাজার টাকা। ৬ সদস্যের পরিবারকে খাওয়ানোর পর আমরা সপ্তাহে হাজারখানেক টাকা সঞ্চয় করি। সাহিয়ার পরিবার সেই অসংখ্য বাংলাদেশী পরিবারের একটি, যাদের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ পেশা গ্রহণ করতে হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়