আদমদীঘি প্রতিনিধি: বগুড়ার আদমদীঘির চাঁপাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক নজরুল ইসলামকে হত্যা ঘটনার ১৭দিন পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তাকে মাদক ব্যবসার টাকা ভাগবাটোয়ারা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জবাই করে হত্যা করা হয়। দুই সহোদরসহ তিন মাদক ব্যবসায়ী মিলে মাথায় লাঠির আঘাত ও পরে জবাই করে হত্যা করে বলে এই হত্যার কিলিং মিশনে জড়িত থাকা গ্রেফতারকৃত হান্নান প্রামানিক ওরফে মানিক (২৫) পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছে।
হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলে পুলিশ গতকাল সোমবার সকালে নিহত নজরুল ইসলামকে হত্যায় ব্যবহৃত আলামত লাঠি ও নিহত নজরুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বি-সার্কেল আলমগীর রহমানের নেতৃত্বে ওসি মনিরুল ইসলাম ও তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ চাঁপাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর রাজবাড়ী বৌডুবি পুকুরের ধার থেকে লাঠি ও অপর কিলিং মিশনে থাকা বাহাদুরপুরের আবু বক্কর ছিদ্দিক ও তার ভাই আইয়ুব আলীর বাড়ীর ল্যাট্রিনের সেফটি ট্র্যাকের ভিতর থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
কিন্ত জবাই কাজে ব্যবহৃত ছোড়া উদ্ধার সম্ভব হয়নি। হান্নান ওরফে মানিক আরও জানায়, নজরুল ইসলামকে খুন করার ১০দিন আগে মাদক ব্যবসায়ী আবু বক্কর ও তার ভাই আইয়ুব আলীর বাড়ীতে বসে তারা এই হত্যার পরিকল্পনা করে। এরপর ঘটনার রাত গত ১৬ নভেম্বর রাতে ইয়াবা কেনার কথা বলে কৌশলে নজরুল ইসলামকে ওই গ্রামের মাঠে ধান ক্ষেতে ডেকে নিয়ে তারা প্রথমে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর মাটিতে পড়ে গেলে তাকে জবাই করে হত্যা নিশ্চিত করা হয় বলে পুলিশকে জানায়।
উল্লেখ্য, আদমদীঘির চাঁপাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মন্দিরপুকুর গ্রামের নজরুল ইসলাম (৫৫)কে গত ১৬ নভেম্বর দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে গ্রামের পূর্ব পাশ্বের ধান ক্ষেতে জবাই করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই শাহাজাহান আলী বাদী হয়ে এজাহারে কারও নাম উল্লেখ না করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গত ২১ নভেম্বর ভেনলা গ্রামের গুপ্ত সরকারকে গ্রেপ্তার করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত থেকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, হত্যাকান্ডের ১৭ দিন পর গত রবিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে মাতাপুর গ্রামের আনছার আলীর ছেলে হান্নান ওরফে মানিককে গ্রেপ্তার করার পর সে এই লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের পরিকল্পনা ও হত্যার কথা স্বীকার করলে এই রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়। আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আবু বক্কর ছিদ্দিক ৫দিন আগে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে ও তার ভাই আইয়ুব আলী বিদেশে যাবার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের স্ত্রী রেখা ও জোসনাকে থানায় নেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :