শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২১ সকাল
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৪:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোয়ান্টাম ফিজিক্স এবং কোয়ান্টাম স্টাটিস্টিক্সকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্র নাথ বোস

কামরুল হাসান মামুন, ফেসবুক থেকে: আসছে ১ জানুয়ারি ২০১৯ সত্যেন্দ্র নাথ বোসের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। এই বিশেষ দিনটিকে পালনের জন্য আমাদের কি কোনো প্রস্তুতি আছে? পৃথিবীবরেণ্য এই মানুষটি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়টি অর্থাৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন সেই ১৯২১ থেকে ১৯৪৭ সাল মোট ২৫ বছর এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সার্ভিস দিয়ে গিয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতে গিয়ে এই কার্জন হলের বিভাগীয় প্রধানের অফিস কক্ষে বসেই কোয়ান্টাম ফিজিক্স এবং কোয়ান্টাম স্টাটিস্টিক্সে যুগান্তকারী গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। যেই মানুষটি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান এতো বাড়ালেন, যেই মানুষটি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে তার সেরা সময়ের ২৫টি বছর দিয়ে গেছেন তার জন্য এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি করেছে? এই যে আগামী ১ জানুয়ারি তার ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আসছে, তার জন্য আমরা কি আয়োজন করছি? তার নামে একটি সেন্টার করেছি। এটি এমন একটি অবহেলিত সেন্টার যেটির কোন নিজস্ব বিল্ডিং নেই, গবেষণার জন্য নেই তার নিজস্ব জনবল। এইরকম অবহেলিত একটি সেন্টার থাকা কি তার নামের প্রতি সুবিচার হয়? বরং এইরকম জীর্ণশীর্ণ একটি সেন্টার থাকা মানে তাকে অপমান করা। তাকিয়ে দেখুন কলকাতা বোস সেন্টার! কি তার জৌলুস, কিরকম তার অবকাঠামো, কেমন তার লোকবল, কেমন তার গবেষণা বাজেট! ভাবলে কষ্ট হয়! কলকাতা বোস সেন্টার ফর বেসিক সাইন্সেস পুরো ২০১৮ সাল জুড়ে ২০১৯ সালের পহেলা জানুয়ারির জন্মদিনটিকে ঘিরে কনফারেন্স, সেমিনার ইত্যাদির কি বিশাল আয়োজন। সেই কর্মযজ্ঞের সূচনা হয় ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারিতে নরেন্দ্র মোদির উদ্বোধনী ভাষণের মাধ্যমে।

যতদূর জানতে পেরেছি, পহেলা জানুয়ারি ২০১৯ সালটি তারা (কলকাতা বোস সেন্টার ফর বেসিক সাইন্সেস) অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে নানা সভা সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে পালন করবে। আমরা কি পারতাম না? এই বছরের শুরুর দিকে কলকাতার বোস সেন্টার আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে বলেছিল যে, তারা আমাদের সাথে যৌথভাবে বোসের জন্মদিন পালন করতে চায়। ওখানকার সিনিয়র অধ্যাপক আমাকে ফোন করে আমাদের প্রশাসনিক বড় ব্যক্তিদের ঠিকানা জানতে চেয়েছিলেন। সেই মোতাবেক তারা চিঠিও দিয়েছিলেন। তারপর যতটুকু বুঝতে পেরেছি, আমাদের দিক থেকে ইতিবাচক সারা না পেয়ে তারা আর আমাদের সম্পৃক্ত করেনি। যাহোক, ওই চিঠিতো আমাদের জাগিয়ে দেয়ার কথা। এরপরতো ওদের সাথে যৌথভাবে না করি, একা একা বড় কোন আয়োজন করে আমরাওতো দেখিয়ে দিতে পারতাম যে, বোস আমাদের এবং আমরাও তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে জানি।

আমরা কি পারতাম না তার নামে যে সেন্টারটি আছে, তাকে বিশ্বমানের করে বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া যে বোস আমাদের। বোসের সকল যুগান্তকারী কাজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোবাতাসে, এই ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে গিয়েই হয়েছে। তাতে তার প্রতি যেমন সম্মান দেয়া হতো, তার সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বৃদ্ধি পেতো এবং আমাদের ছাত্রছাত্রীরা তথা দেশ উপকৃত হতো। কিন্তু এতোসব ভালো চিন্তা করার উপযুক্ত মানুষতো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে নেই। যারা আছে তারা কেবল নির্বাচন আর ক্ষমতা নিয়েই দিবস রজনী ব্যস্ত থাকেন।

জাঁকজমকভাবে পালনের জন্য আমাদের কি একজন স্পন্সর পাওয়া যাবে না? এই দেশে নাকি বড়লোকের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে? কিন্তু বড় আত্মার মানুষতো তেমন হারে বাড়তে দেখছি না। বরং দেখছি রাক্ষসের সংখ্যা বাড়ছে। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিতেতো আমাদের টাকার অভাব দেখছি না। সামান্য কিছু টাকা হলে আমরা জাঁকজমকভাবে তার জন্মদিনটি পালন করতে পারতাম। ওই সামান্য টাকা কি এর চেয়ে বেটার পথে খরচ করা সম্ভব? পরিচিতি : অধ্যাপক, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়/সম্পাদনা : আবদুল অদুদ, আলমগীর

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়