আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রবিবার মানেই ছুটির আমেজ। মজা, আড্ডা আর শুধুই গল্প! সারা সপ্তাহ কাজের পর আমরা এই দিনটার অপেক্ষাতেই থাকি। জমিয়ে খাওয়া, ঘুম আর আলসেমিতে দিনটা কাটানো। সানডে মানেই ‘ফান ডে’। কিন্তু ভেবে দেখেছেন কেন রবিবারেই ছুটি থাকে
বেশির ভাগ ছুটিই কেন রবিবারে হয়, এর পিছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে। বলতে পারেন ইতিহাসও জড়িত। ভারতে ব্রিটিশ শাসনকাল থেকেই রবিবারে সাপ্তাহিক ছুটির উত্পত্তি। তবে সহজে কিন্তু এই ছুটি অর্জিত হয়নি।
ব্রিটিশ ভারতে কারখানায় শ্রমিকদের সপ্তাহের সাত দিনই কাজ করতে হত। ছুটি মিলত না। সেখানে প্রতি রবিবার ব্রিটিশ অফিসাররা গির্জায় প্রার্থনা করতে যেতেন। ফলে ওই দিন শুধু তাঁদেরই ছুটি থাকত। কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনও ছুটি ছিল না।
সে সময় শ্রমিকদের এক নেতা ছিলেন শ্রীনারায়ণ মেঘাজি লোখান্ডে। মহারাষ্ট্রের ঠাণের বাসিন্দা। তাঁকে শ্রমিক আন্দোলনের পথিকৃত বলা হয়
তিনি ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের বলেন,৬ দিন কাজের পর সপ্তাহে একটা দিন ছুটি দেওয়া দরকার শ্রমিকদের। ওঁদেরও অবকাশের প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, রবিবার হিন্দু দেবতা ‘খান্ডোবা’র দিন। তাই শ্রমিকদের ওই দিন সাপ্তাহিক ছুটি জরুরি।
তবে লোখান্ডের এই প্রস্তাব সরাসরি খারিজ করে দিয়েছিল ব্রিটিশ কর্মকর্তারা কিন্তু লোখান্ডে হার মানেননি। এই দাবি আদায়ে শ্রমিকদের নিয়ে প্রায় সাত বছর লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন
অবশেষে লোখান্ডে ও শ্রমিকদের দাবির কাছে হার মানে ব্রিটিশ সরকার। ১৮৯০ সালের ১০ জুন রবিবারকে শ্রমিকদের জন্য সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে ব্রিটিশ সরকার। সেই সাথে কাজের মাঝে আধ ঘণ্টা খাওয়ার সময় এবং প্রতি মাসের ১৫ তারিখে শ্রমিকদের মাইনের ব্যবস্থা তাঁর কারণেই হয়েছে।
কিন্তু মজার বিষয় হল, ব্রিটিশরা দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছে। ভারতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশদের থেকে আদায় করে নেওয়া সাপ্তাহিক ছুটিটি অপরিবর্তিতই থেকে গিয়েছে। ভারত সরকারও সেই নিয়ম আর বদলায়নি। ফলে সেই থেকেই রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবেই চলে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন :