সুজন কৈরী : আব্দুল্লাপুর-আশুলিয়া সড়কে যাত্রীবেশী সংঘবদ্ধ ডাকাতি ও অপহরণকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৯ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। তারা হলো- চক্রের মূলহোতা মো. ইমরান (২১), মো. জিহাদ আলী (১৮), মো. শান্ত হোসেন (১৯), মো. রকিবুল হাসান (১৮), রাকিবুল ইসলাম (১৯), মো. নাঈম মিয়া (১৯), মো. জুলহাস হোসেন (১৮), মো. বাবুল হোসেন (২২) ও মো. হাবিবুর রহমান (২৭)। তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ২ রাউন্ড গুলি, ডাকাতির কাছে ব্যবহৃত ২টি বাস, ১টি ছুরি, ২টি চাকু, ২টি চাপাতি, ৯টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, শনিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের র্যাব-১ আটক করে। আটককৃতরা যাত্রী বেশে যানবাহনে উঠে যাত্রীদের অপহরণ করে। পরে মুক্তিপন আদায় ও নারী যাত্রীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে যানবাহনে নারী যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ আসার পরই তদন্তে নেমে র্যাব-১ একপর্যায়ে আব্দুল্লাহপুর, কামারপাড়া ও আশুলিয়া এলাকা থেকে চক্রের প্রধান ইমরানসহ ৯ জনকে আটক করে।
তিনি জানান, প্রতিটি অপহরণের ঘটনায় তাদের দলে ১০ থেকে ১৫জন লোক থাকে। এদের মধ্যে ৯ থেকে ১০জন সাধারণ যাত্রী বেশে গাড়িতে থাকে। বাকিরা বিভিন্ন স্ট্যান্ড থেকে বাসে ওঠে। তারা মূলত রাত ৮টার পর অপরাধকর্ম করে থাকে। দুয়েকজন যাত্রী বাসে উঠার পর তারা বাসের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে কোনো নির্জন স্থানে গিয়ে যাত্রীদের মারধর করে নগদ টাকা, মুঠোফোন ও মুল্যবান জিনিস-পত্র ছিনিয়ে নেয়। কেউ টাকা দিতে না চাইলে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে নির্জন স্থানে ফেলে দিত। এছাড়া এছাড়া ভিকটিমের মোবাইল ফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ফোন করে অর্থ আদায় করার পাশাপাশি সাভার, আশুলিয়া, চন্দ্রা ও গাজীপুরের বিভিন্ন নির্জন রাস্তায় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানী করত বলেও তারা স্বীকার করেছে। আটক আসমানী পরিবহণের ১টি বাস নারায়নগঞ্জের মদনপুর থেকে উত্তরা-আব্দুল্লাপুর চলাচল করে। অপরটি মৌমিতা পরিবহণের বাসটি নারায়নগঞ্জের চাষাড়া থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত চলাচল করে।
র্যাব জানায়, এই চক্রের মূল হোতা ইমরান। সে চার বছর ধরে ডাকাতি ও অপহরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত। বশির নামে এক বন্ধুর মাধ্যমে সে এই কাজে যুক্ত হয়। ধীরে ধীরে সে নিজেই দলনেতা হয়ে ওঠে। এর আগে সে একটা চুরির মামলায় ছয় মাস জেলে ছিল। গত চার বছরে ৩০-৩৫টি অপহরণ ও ডাকাতির কাছে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :