রমজান আলী : ব্যাংকের সুদের চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। সরকার বাজেটের ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে করে টাকা তুলে নিচ্ছে বলে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের পরিমাণ কমেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, সুদ বেশি হওয়ার কারণে মানুষ বেশি ঝুঁকছে সঞ্চয়পত্রের দিকে। তাই ব্যাংকিং খাত থেকে সরকার অর্থ বছরে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকেরও অনেক কম ঋণ নিয়েছেন। চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণের নেয়ার কথা ছিল ১৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। কিন্তু ঋণ নিয়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ নিয়ে সরকারের ব্যাংকিং খাত থেকে মোট ঋণের পরিমাণ ৯৪ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। ৩০ জুন পর্যন্ত এ ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৮ কোটি ২৫৭ কোটি। চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের সরকারের ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট রয়েছে। এই বাজেটের ঘাটতি রয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। দেশি বিদেশি উৎস থেকে এ অর্থ সংগ্রহ করা হবে। যা আগের বছরের সংশোধিত বাজেটের ঋণের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। এ অর্থের মধ্যে বৈদেশিক উৎস থেকে ৬০ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। ঘাটতির বাকি ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা নেওয়া হবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা। বাকি ২৬ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা নেওয়া হবে সঞ্চয়পত্র থেকে। তিন হাজার কোটি টাকা অন্য উৎস থেকে। বাজেটের হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক থেকে সরকারের প্রতিদিন ঋণ নেওয়ার কথা ১১৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে চলতি নভেম্বর মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত ১২৫ দিনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার কথা ১৪ হাজার ৩৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ব্যাংকিং খাত থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ হাজার ২৩৩ কোটি ৬৩ টাকা কম ঋণ নিয়েছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে পুরো বছরের হিসাব অনুযায়ী, জুলাই-অক্টোবর চার মাসে সরকারের অর্থ সংগ্রহ করার কথা ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। কিন্তু সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ ১৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সে হিসাবে পুরো মাসের প্রাক্কলন ছয় মাসের সঞ্চয়পত্রের বিক্রি থেকে উঠে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :