মোহাম্মদ রুবেল: দেশে ৬১ ভাগ মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক (এনসিডি) রোগ। এ রোগের চিকিৎসার খরচ মেটাতে যেয়ে বাংলাদেশের দারিদ্র জনগোষ্ঠীর ৫৯ লাখ মানুষ দারিদ্র হয়ে যাচ্ছে। এ রোগের মধ্যে ১৭ ভাগ হৃদরোগ ও স্ট্রোকে, ১১ ভাগ ফুসফুসের জটিলতায়। ১০ ভাগ ক্যানসারে ও ডায়াবেটিসে ৩ ভাগ এবং অন্যান্য অসংক্রামক ব্যাধিতে মারা যায় ১৮ ভাগ। খবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিসংখ্যান শাখা সূত্রের।
স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞরা বলছেন, অসংক্রামক ব্যাধি কখনো নির্মূল সম্ভব না হলেও শক্তভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব। শরীরের এমন কোনো অঙ্গ নেই, যা তামাকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়না। বিশেষ করে হৃদরোগ, ক্যানসার ও স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে তামাক ব্যবহার করে যার ৪৫ ভাগই পুরুষ। তামাকের প্রভাবে দেশে প্রতিবছর ১০ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। অথচ কেবল মাত্র ধূমপান ত্যাগ করেই ৫০ শতাংশ ক্যানসার– ঝুঁকি মুক্ত থাকা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিপিডিন ফ্যালো মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের নতুন সময়কে বলেন, দেশের ১৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ পারিবারিক খরচের ১০ শতাংশের বেশি খরচ করছে চিকিৎসা ব্যয়ে।
তিনি বলেন, এসডিজির ( টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) ৩ নম্বর লক্ষ্যমাত্রায় আছে, ‘গুড হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং ফর অল এজেজ। অথচ বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বাজেটের ২ শতাংশের কম বরাদ্দ করা হয়েছে। এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সম্ভব নাও হতে পারে।
সিপিডি ফ্যালো আরও বলেন, অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। এসডিজির তিন-এ (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) এই তামাক নিয়ন্ত্রণের কথাও বলা আছে। তাই সরকারকে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তামাক চাষ বন্ধ করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক, আবুল কালাম আজাদ: অসংক্রামক ব্যাধি এমন যে একবার হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সারা জীবন থাকে। বাংলাদেশের ৬১ শতাংশ মানুষের অসুস্থতায় মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক ব্যাধি। তিনি বলেন, ননকমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল এসডিজিতে এনসিডির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকারও এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এনসিডিকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করছে। এ জন্য ননকমিউনিকেবল ডিজিজকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছি। ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন, ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, পুড়ে যাওয়া, সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে ক্ষত হওয়া রোগের ক্ষেত্রে আমাদের কর্মসূচি রয়েছে।
সম্পদনা: শাহীন চৌধুরী, হুমাযুন কবির খোকন