মতিনুজ্জামান মিটু: সবার পাতে তুলে দেয়ার জন্য প্রায় সারাক্ষণ প্রাণান্ত পরিশ্রম করেও নিজেরা এক টুকরা মাছ খেতে পান না দেশের মৎস্য শ্রমিকরা। নির্দিষ্ট মজুরী বলতে কিছুই নেই তাদের। গভীর সমুদ্র ও দূর্গম জঙ্গলের জলাশয়ে দিনের পর দিন থাকার সব খরচ মৎস্য শ্রমিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে নগদ টাকার বদলে তাদেরকে দেয়া হয় আহরিত মাছের মাত্র ২৫ ভাগ। বাটকারা নয় বালতি দিয়ে মেপে মজুরী বাবদ দেয়া হয় এই মাছ। নিখোঁজ হলেও যথাযথ ভাবে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়া হয় না তাদের।
মঙ্গলবার( ২৭ নভেম্বর ) রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘মৎস্য শ্রমিকের অধিকার ও সুরক্ষা : বিদ্যমান অবস্থা এবং উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তাদের আলোচনায় তাদের জীবনের এসব হৃদয় বিদারক তথ্য উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মোট শ্রম শক্তির ৯ ভাগ মৎস্য শ্রমিক। জিডিপিতে ৫ ভাগ অবদান রাখলে এরা অবহেলিত। বহুমাত্রিক শোষনে জর্জরিত মৎস্য শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং কর্মপরিবেশ খুবই নাজুক। বাংলাদেশের আমিষের বড় অংশ পূরণ করেও এরা নিজেরাই অপুষ্টির শিকার।
বক্তরা আরও বলেন, মাছ ধরতে যেয়ে অহরহ অপহরণের কবলে পড়ে জীবন বিপন্ন হলেও আজও তাদের রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ মাছ ধরার ট্রলার গুলোতে ২৫/২৬ হাজার টাকা দামের ট্রাকিং ডিভাইস বা মেশিন বসিয়েই সহজেই তাদের জীবন বাঁচানো সম্ভব।
কর্মশালার আয়োজক সংগঠন বিলস এর ভাইস চেয়ারম্যান মো, মোজিবুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনেকের মধ্যে আলোচনা করেন, এফইএস’র বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি টিনা বিলোহম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসাল ওয়ার্ক বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম, জাতীয় শ্রমিক জোটের প্রেসিডেন্ট মেজবাহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, বিলস্ এর নির্বাহী সম্পাদক জাফরুল হাসান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সমাজকল্যাণ সম্পাদক এস কে জাকির হোসেন, বিএফটিইউসি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌধুরী হাবিবুর রহমান, এফইএস’র অরুণধুতি রানি প্রমুখ। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেনারেল সেক্রেটারী চৌধুরী আশিকুল আলম।
আপনার মতামত লিখুন :