আমিরুল ইসলাম : দেশের বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার প্রধান কারণ হতাশা বলে মনে করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক, মনোবিদ ডা. মো. তাজুল ইসলাম। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে হতাশা সৃষ্টি হয়ে থাকে। যখন শিক্ষার্থীরা আর একেবারেই এই হতাশার চাপ নিতে পারে না তখনই তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
তিনি আরও বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রদের হতাশার প্রধান কারণ হচ্ছে পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট করা, চাকরি না পাওয়া, আর্থিক সমস্যা, ইচ্ছে করে ফলাফল খারাপ করিয়ে দেওয়া, শিক্ষকদের খারাপ আচরণ,রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পরা, বন্ধুবান্ধবের সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে না পারা। এছাড়াও নানাবিধ কারণে তাদের মাঝে হতাশার সৃষ্টি হয়। বিশ^বিদ্যালয়গুলোতে বিশেষজ্ঞ না থাকায় সঠিকভাবে তাদের কাউন্সিলিং করা হয় না। এছাড়াও পরিবারের, বন্ধুবান্ধবের সাথে তাদের দুঃখ-কষ্ট ও হতাশাবোধের অভিব্যক্তি ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারছে না। হতাশার জন্য প্রয়োজনীয় যে চিকিৎসার দরকার তা তারা পাচ্ছেন না। অনেক সময় নিজ পরিবারের লোকজনও তাদের খোঁজ নেয় না। আত্মীয়-স্বজন সঙ্গী-সাথীরাও তাদের খোঁজ না নেওয়ায় তারা আরও হতাশ হয়ে পড়ছে। হতাশা থেকে মুক্তির আর কোনো পথ যখন খোলা না পায়। এক সময় মনের মধ্যে গভীর হতাশাবোধের সৃষ্টি হওয়ার ফলে শেষ পরিণতি হিসেবে তারা আত্মহত্যাকে বেছে নিচ্ছে।
ডা. তাজুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাব রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য মনিটর সেল নেই , পরামর্শ কেন্দ্র নেই। অনেক প্রতিষ্ঠানে মনিটর সেল ,পরামর্শ কেন্দ্র থাকলেও তা কেবল নামে মাত্র কাজে নেই। আইন আছে, প্রয়োগ নেই। কর্তৃপক্ষ তাদের শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন না। দেখা যাচ্ছে একজন শিক্ষার্থী অনেকদিন ক্লাসে না এলেও তাদের খোঁজ নেওয়া হয় না। এসব আত্মহত্যা বন্ধের জন্য কর্তৃপক্ষের তদারকি বৃদ্ধি করতে হবে, প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্র্র্থীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের ভালো আচরণ করতে হবে। পরিবারের লোকজনদের তাদের সন্তানের খোঁজ খবর নিতে হবে বলেও মনে করেন এই মনোবিদ।
আপনার মতামত লিখুন :