আরিফুর রহমান তুহিন: দ্বিতীয় প্রজন্মের শহরগুলোতে অনেক সমস্যা বিদ্যমান। দ্রুত বেড়ে ওঠা শহরগুলোর জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বিত কাজ। কিন্তু আইনের বাধ্যবাধকতার কারণে মেয়ররা সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারেন না। রয়েছে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। যার খেসারত দিতে হয় বাসিন্দাদের।
রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘প্রোমোটিং ইকুয়েটাবল ইকোনোমিক গ্রোথ ইন সেকেন্ডারি টাউনস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ফাইনাল ডিনেমিনেশন ওয়ার্কশপের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। বিআইজিডি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এই কর্মশালার আয়োজন করে।
ব্র্যাকের রিসার্স ফেলো শাহনেওয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, এশিয়া সিটিস অ্যালায়েন্সের আ্যঞ্চলিক উপদেষ্টা ড. অজয় সুরি, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মাটিন, সিটিস অ্যালায়েন্সের কনসুলেট ড. কে রাজিভানসহ বিশিষ্টজনরা।
সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সেকেন্ডারি সিটি নিয়ে অনেক আলোচনা করা হয়। কিন্তু সেগুলো টেবিলের মধ্যেই সিমাবদ্ধ থাকে। কারণ আইনী বাধ্যবাধকতার কারণে সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। সিলেট সিটির আয়তন ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু এটা নিয়ে সঠিক কোনো পরিকল্পনা নেই। পরিকল্পনা গ্রহণ বা অন্য কোনো কারণে জেলা প্রশাসককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও আত্মমর্জাদা কারণে তিনি আসেন না। অথবা ভুল করে আসলে পরের দিন ওনার পোস্ট থাকবে না। এমন অবস্থায় কিভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব? জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হলে রাজনৈতিক বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
টানা দুইবারের নির্বাচিত এই মেয়র বলেন, সিলেটে ১৮৭টা মেডিকেল আছে। কিন্তু তার অর্ধেকেরও কম মেডিকেল আলাদাভাবে বর্জ্য দিয়ে থাকে। এভাবে ২৫-২৬ বছর যাবত চলে আসছে। সাধারণ ও মেডিকেল বর্জ্য একসাথে মিলেমিশে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। অথচ আইনে আছে- প্রত্যেক মেডিকেলের আলাদা বর্জ্য ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগের সেটাতো নেই-ই বরং যারা বর্জ্য নিয়ে আসে তাদেরকে ম্যানেজ করে সাধারণ বর্জ্যরে সঙ্গে মেডিকেল বর্জ্য দিয়ে দিচ্ছে।
ব্র্যাকের রিসার্স ফেলো ড. শাহনেওয়াজ হোসেন বলেন, ব্র্যাক সেকেন্ডারি শহর এলাকায় মেয়ররা কি কি উন্নয়ন করতে পারে সেই বিষয়ে ২০১৭ সালে একটি সার্ভে শুরু করে। সার্ভের ফলাফলে দেখা যায়, অসংখ্য কাজ রয়েছে যেগুলো আইনে না থাকার কারণে মেয়ররা করতে পারেন না। আবার অনেক প্রকল্প রয়েছে যেগুলো সমন্বয়ের অভাবে জনগণের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। যেমন নারায়ণগঞ্জ সিটির পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটির সাথে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ের অভাবে সেখানকার পানির সমস্যা লেগেই আছে। একই সমস্যায় রয়েছে গাজিপুর ও সাভার এলাকা।
তিনি জানান, বিআইজিডির সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। একটি হলো ওমেন সিটি কমপ্লেক্স নির্মাণ আর অন্যটি হলো সিটি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনও দুটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, একটি হলো মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং অন্যটি ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন। প্রকল্পগুলোতে আর্থিক সহায়তার জন্য দাতা সংস্থাদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :