শিরোনাম
◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ ভিত্তিহীন মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের নাজেহাল করা হচ্ছে: মির্জা ফখরুল ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী ◈ অপরাধের কারণেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের  বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ অ্যাননটেক্সকে জনতা ব্যাংকের সুদ মওকুফ সুবিধা বাতিলের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট এলার্ট জারি  ◈ ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর, ২০১৮, ০৮:৪০ সকাল
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০১৮, ০৮:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নতুন সংসদ ও সরকার নিয়ে আইনি ধোঁয়াশা

প্রিয়.কম : আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে কাজ করে চলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন সম্পন্ন হলে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে। নির্বাচনের ফল প্রকাশ হওয়ার পর বাকি থাকবে এমপিদের শপথ, গেজেট প্রকাশসহ অন্যান্য কাজ। আর ২৮ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ। এরপর একাদশ সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের শপথ গ্রহণসহ অন্যান্য কাজ শেষ না করতে পারলে ও আগের সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে কী হবে। এর সমাধানে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট আইন বিধান। বিষয়টিতে রয়েছে নানা প্রশ্ন ও আইনি ধোঁয়াশা।

কোনো কোনো আইন বিশেষজ্ঞ বলছেন সব কিছু নিয়ে আইন তৈরি হয় না। কিছু রীতি-নীতি, প্রথা অনুসরণ করে চলতে হয়। এমন বিষয় নিয়ে কয়েকজন আইন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা হয়।

বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘সংবিধান তো মানুষের জন্য। সংবিধানের জন্য তো মানুষ না। নির্বাচনের পর এই জিনিসগুলো সমাধান করা যাবে। এজন্য সকলকে থাকতে হবে ঐক্যবদ্ধ।’

তার মতে, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে দায়িত্ব হস্তান্তর ও পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে সমস্যা হবে না। নির্বাচনটা সুষ্ঠু হলো কি না, গ্রহণযোগ্য হলো কি না; সেটিই দেখার বিষয়।

সব কিছু আইন দিয়ে হয় না, এমন মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিয়ময় বড়ুয়া বলেন, ‘কোন বিষয়ে আইন না থাকলে সেটি সংবিধানে ১৫২ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করতে হয়।’

সংবিধানে ১৫২ অনুচ্ছেদ বলা আছে "আইন" অর্থ কোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ, বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন, বিজ্ঞপ্তি ও অন্যান্য আইনগত দলিল এবং বাংলাদেশে আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন যে কোন প্রথা বা রীতি;

তিনি বলেন, ‘সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত ক্ষমতা হ্যান্ডওভার (হস্তান্তর) না করবে, ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন দায়িত্বে থাকছে। আসলে ঘাটতি একটা থাকছেই কিন্তু সে ঘাটতি কে পূরণ করবে, সেটি কিন্তু সংবিধানে নেই। এই জন্য একটি নির্বাচনকালীন অন্তবর্তীকালীন সরকার থাকা উচিত ছিল, যে দাবিটি প্রায় সময়ই ওঠে।

‘আইন না থাকলেও সংবিধানের অভিভাবক হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তো স্যুয়োমুটো দেবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত কোনো পলিটিক্যাল সিদ্ধান্ত নেবে না। সুপ্রিম কোর্ট হলো কনস্টিটিউশনের কাস্টরিয়ান। সুপ্রিম কোর্টের পলিটিক্যাল ডিশিসন নেওয়ার রাইট (অধিকার) নাই।’

সাংবিধানিক শূন্যতা বা আইনি জটিলতা তৈরি হলে তার সমাধান দেবে সুপ্রিম কোর্ট। এমন মতামত দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এমপিদের শপথ গ্রহণসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন না হলে জটিলতা তৈরি হতে পারে।’

‘আগের এমপিদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তাদের আর কোনো পাওয়ার (ক্ষমতা) থাকবে না। সংসদ থাকবে না, তবে সরকার যেটা আছে সেটা থাকবে।’

যদি সংকট তৈরি হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে সমাধান আসবে কোন জায়গা থেকে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সমাধান চাইতে হলে সুপ্রিম কোর্টের কাছে যেতে হবে। কোর্টের কাছে ব্যাখা চাইতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কী ব্যাখা দিতে পারে সেটি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে- যদি কোন সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোন প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরনের ও এমন জন-গুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।

মঞ্জুরুল হক আরও বলেন, ‘সাধারণত এ রকম সংকট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’

ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে সংকট তৈরি হলে কী হবে

নির্বাচনের পর সরকারের দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে সমাধানের জন্য রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। জরুরি অবস্থা জারি করা নিয়ে সংবিধানের ১৪১ক এর(১) এ বলা আছে রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি-অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি অনধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য জরুরি-অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন

(২) তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্য ঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি-স্বাক্ষর প্রয়োজন হইবে।

এসব বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর, সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন না থাকলেও সংবিধানের আলোকে সুপ্রিম কোর্ট সমাধান দিতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়