শিরোনাম
◈ হলমার্ক কেলেঙ্কারির রায় ঘোষণার সময় পালিয়ে গেলেন জামাল উদ্দিন সরকার ◈ ২৯ কৃষি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ বাস্তব বিবর্জিত: দোকান মালিক সমিতি ◈ তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদিকে বাড়ি ছাড়তে হবে: হাইকোর্ট  ◈ সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে জনগণকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: বিএনপি ◈ সরকারের ফাঁদে পা দেইনি, দল ছাড়িনি, ভোটেও যাইনি: মেজর হাফিজ ◈ আমার একটাই চাওয়া স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জিম্মি জাহাজ উদ্ধারে অভিযান নয়, আলোচনা চায় মালিকপক্ষ ◈ বিএনপিকে আমরা কেন ভাঙতে যাবো, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের  ◈ হলমার্ক মামলায় তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন ◈ ভোরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২০

প্রকাশিত : ২২ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:০৬ রাত
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:০৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ থেকে শিক্ষার্থীকে শূন্য দিলেন অধ্যাপক!

নিউজ ডেস্ক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণিত বিভাগের অধ্যাপক জেসমীন আখতারের বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ থেকে ৪৩ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পরও কোনো নম্বর না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ভালো পরীক্ষা দিলেও স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, ওই ব্যাচের সব শিক্ষার্থীকেই উপস্থিতি ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগও করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক জেসমীন আখতার ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ থেকে সবার নম্বর কমিয়ে দিয়েছেন। এমনকি মুক্তা বিশ্বাসের ওপর ক্ষোভ থাকায় তিনি টিউটোরিয়াল ও ক্লাস উপস্থিতির মোট ৩০ নম্বরের মধ্যে ‘শূন্য’ দিয়েছেন। যে কারণে মুক্তা বিশ্বাস চূড়ান্ত পরীক্ষায় অন্যান্য কোর্সে কৃতকার্য হলেও ৪০৯ কোর্সটিতে অকৃতকার্য হয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক জেসমীন আখতার বলেন, ‘এটা একটা মিসটেক। আমি এরই মধ্যে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর সংশোধনী পাঠিয়ে দিয়েছি।’

অন্যান্য কোর্সে উপস্থিতিতে পূর্ণ নম্বর পেলেও আপনার কোর্সে কোনো শিক্ষার্থীই পূর্ণ নম্বর পাননি কী কারণে— এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জেসমীন বলেন, ‘সব ক্লাসে হয়তো উপস্থিত ছিল না। এজন্য পূর্ণ নম্বর পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই শিক্ষার্থীদের বেশি নম্বর দিয়ে থাকি। আমার সহকর্মীরা মাঝে মাঝে বলে থাকেন, আপনি কেন এত নম্বর দেন। এবারই প্রথম আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনছি যে আমি নম্বর কম দিয়েছি।’

তবে কথার একপর্যায়ে মুক্তা বিশ্বাস প্রসঙ্গে অধ্যাপক জেসমীন বলেন, চতুর্থ বর্ষে তার কোর্সের একটি ক্লাসে মুক্তা বিশ্বাস অন্যের হয়ে উপস্থিতি দেন। মুক্তা বিশ্বাস তার পূর্বপরিচিত হওয়ায় তিনি তা হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তবে ওই দিন বারবার জিজ্ঞাসা করলেও মুক্তা নিজের পরিচয় গোপন করেন এবং যার পরিবর্তে তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেলেন, তার নামকেই নিজের নাম হিসেবে উপস্থাপন করেন। পরে ক্লাসের অন্য শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারাও মুক্তার প্রকৃত পরিচয় এড়িয়ে মিথ্যা পরিচয় দেন শিক্ষকের কাছে।

অধ্যাপক জেসমীন বলেন, ‘আমি অন্যায় একেবারেই সহ্য করতে পারি না। এখন তো ছেলেমেয়েরা মাঝেমাঝেই অন্যের হয়ে উপস্থিতি দেয়। তবে আমি বলি, এটা করার দরকার নেই। আমি তোমাদের নম্বর বেশি দিয়ে দেবো।’

নম্বর কম পাওয়ার প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মুক্তা ছোট একটা অপরাধ করেছে। সেটার জন্য ম্যাডাম তাকে এটেডেন্সে শূন্য দিতে পারতেন। কিন্তু টিউটোরিয়ালের সাথে অ্যাটেনডেনসের কী সম্পর্ক? এটার জন্য তো টিউটোরিয়ালে শূন্য দিতে পারেন না। আর অপরাধ করেছে মুক্তা। এজন্য তো তিনি সবাইকে নম্বর কমিয়ে দিতে পারেন না।’

স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের অন্য কোর্সের কোনটিতেই টিউটোরিয়াল ও উপস্থিতিতে ৩০ নম্বরের মধ্যে ২৪ নম্বরের কম পাননি বলে জানান এই শিক্ষার্থী। অথচ একমাত্র এই কোর্সে তিনি ১৫ নম্বরেরও কম পেয়েছেন। অন্যরাও বাকি কোর্সে বেশি নম্বর তুলতে পারলেও এই কোর্সে খুবই কম নম্বর পেয়েছেন। আর উপস্থিতিতেও কাউকেই প্রাপ্য নম্বর দেয়া হয়নি। অধ্যাপক জেসমীন আখতার এটা ‘ইগো প্রবলেম’ থেকে এটা করেছেন বলে দাবি তার। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা উপাচার্য ম্যাডামের সাথে দেখা করে আবেদন করবো। আমরা চাই আমাদের টিউটোরিয়ালের ও অ্যাটেনডেনসের নম্বর পূনর্মূল্যায়ন করা হোক। আমরা আমাদের প্রাপ্য নম্বর পেতে চাই।’

অধ্যাপক জেসমীন আরও বলেন, আমি আমার কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে টিউটোরিয়াল ও উপস্থিতির নম্বর প্রকাশ করি। কিন্তু সেসময় বা তার পরে সে আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করেনি। পরে আমি ভুলে সেটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণিত বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফ্লুইড মেকানিকস কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার কিছুক্ষণ আগে ওই কোর্সের টিউটোরিয়াল ও উপস্থিতির নম্বর প্রকাশ করা হয়। প্রত্যাশিত নম্বর না পাওয়ায় তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রে অধ্যাপক জেসমীন আখতারকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তবে সে সময় তিনি ‘ফলাফল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকে পাঠানো হয়ে গেছে, এখন আর কিছু করার নেই’ বলে মন্তব্য করেন বলে দাবি করেন ওই শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে গণিত বিভাগ ৪৩ ব্যাচের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ সাব্বির আহমেদ এবং গণিত বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। সূত্র: সারাবাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়