রমজান আলী : রাস্তার পাশে লাইন দিয়ে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে বসে ব্যবসায়ী, গ্রাহকরা তাদের প্রয়োজন মতো টাকা কিনছেন! ওই অনেকটা আলু, পট কেনার মতোই! নিশ্চয়ই ভাবছেন এ কোনও গল্পকথা! বাস্তবে এমনটা আবার সম্ভব হয় নাকি? হয়! এমন বিচিত্র বাজার রয়েছে আফ্রিকার ছোট্ট দেশ সোমালিল্যান্ডে। সেখানে বিক্রি হয় টাকা। জাল বা নকল নয়, এক্কেবারে আসল টাকা! খোলা রাস্তায় দিন-দুপুরে ক্রেতারা বিনিময় প্রথার মাধ্যমে ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছে রাশি রাশি টাকা, ওখানে যার নাম ‘শিলিং’।
শিলিংয়ের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ২০০০ সালে এক ডলারের ছিল ১০ হাজার শিলিংয়ের কাছাকাছি। ২০১৭ সালেও প্রথম দিকে ৯ হাজার শিলিংয়ের সমান ছিল এক ডলার। তাই ডলার বা ইউরোর নিরিখে সামান্য খরচ করলেই পাওয়া যেত কয়েক কেজি নোট! যা নিতে বস্তা বা ঠেলাগাড়ির প্রয়োজন হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে গেলেও টাকার বস্তা নিয়ে বের হতে হয় এখানে। শিলিংয়ের এমন মূল্যহীনতার কারণেই সোমালিল্যান্ডের টাকার গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।
টাকার দাম এখানে এতই কম যে, এ টাকার বাজারে অতিরিক্ত নিরাপত্তা নেই। এমনকি ছিনতাইকারী চোর-ডাকাতও এই শিলিং চুরি করতে আগ্রহ দেখায়নি। তাই রাস্তার পাশে পথের উপর ফেলে রেখে বিক্রি হলেও কোনও অসুবিধা হয়নি। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। সোমালিল্যান্ড দেশটি ‘ডলারাইজড’ হচ্ছে। চালু হয়েছে মোবাইল মানিও। এক বছরেই মোবাইল মানির ব্যবহার ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ। বর্তমানে এক মার্কিন ডলারের দাম (ভারতীয় মুদ্রায় ৭২.১২ টাকা) ৫৮১ শিলিংয়ের কাছাকাছি। ফলে এখন এই বাজারে ব্যবসা অনেকটাই পড়তির দিকে।
আপনার মতামত লিখুন :