আরিফুল ইসলাম : আল্লাহর অপরিসীম নেয়ামতের মধ্যে অন্যতম একটি হলো জিহ্বা। এই জিহ্বা দ্বারা মানুষ দৈনন্দিন জীবনে আল্লাহ পাকের শত সহস্র কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন ও ভাল কাজ করে থাকে। আবার এর দ্বারা অপরের গীবত ও গালমন্দ করে থাকে, সেজন্য জিহ্বা সংযত রাখা খুব জরুরী। ইসলামী শরীআতের পরিবাষায় মুখে কলমে, ইশারা ইংগিত কিংবা অন্য কোনা উপায়ে কারো অনুপস্থিতিতে তার এমন কোন দোষের কথা আলোচনা করা যা শুনলে সে মনে কষ্ট পেতে পারে, তাকে গীবত বলে। যদি এমন কোন দোষের কথা আলোচনা করা হয়। যা আদৌ উক্ত ব্যক্তির মধ্যে নেই তবে সেটা গীবত নয় বরং তোহমত বা অপবাদ।
হযরত সাহল ইবনে সা’দ (রা) হতে বর্ণিত, হযরত রাসুলের কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি ঐ ব্যক্তির জন্য জান্নাতের যিম্মাদার হব যে তার দুচোয়ালের মধ্যবতী বস্তু অর্থাৎ জিহ্বা এবং তার দুই উরুর মধ্যবর্তী তথা লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ করবে। (বুখারী)
মানুষের মুখ ও লজ্জাস্থান পাপকাযে লিপ্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম। যদি এ দুটি অঙ্গকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে পাপ কাজ অনেকাংমেই লোপ পাবে। আর যে ব্যক্তি পাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে তার জন্য বেহেস্তত সুনিশ্চিত।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী ও জাবির (রা) হতে বর্ণিত রসুল (সা.) ইরশাদ করছেন গীবত বা পরিনিন্দা ব্যভিচার হতে ভয়ঙ্কর। সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, পরনিন্দা কি ভাবে ব্যতিচার হতে ভয়ঙ্কর হতে পারে? জবাবে তিনি বললেন, মানুষ ব্যভিচার করে, অতপর ব্যভিচারী তাওবা করে এবং আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করেন। অপর এক বর্ণনায় আছে যে, অতপর ব্যভিচারী তাওবা করে আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমতা করে দেন। কিন্তু নিন্দাকারীকে ক্ষমা করা হয় না; যতক্ষণ যার নিন্দা করা হয়, সে ক্ষমা করে। হযরত আনাস (রা) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ব্যভিচার তাওবা করে কিন্তু নিন্দাকারীর জন্য তাওবা নেই। (বাইহাকী)
জীবিত ব্যক্তিদের পরনিন্দা ও দোষ চর্চা করা যেমন হারাম তেমনি মৃত ব্যক্তিদের পরনিন্দা ও দোষ চর্চা করা হারাম। দুনিয়াতে পরনিন্দার সবচেয়ে বড় কুফল হচ্ছে এই যে, এর ফলে মানুষের মধ্যে একতা নষ্ট হয়। প্রত্যেকের অন্তরে অন্যের প্রতি কু-ধারণা অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়। ভালবাসা ও সম্প্রতি বিলুপ্ত হয়। যার ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ কারণেই রাসুলে কারীম (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জিহ্বা হেফাজত করবে, তার জন্য বেহেশত সুনিশ্চিত।
আপনার মতামত লিখুন :