লিয়ন মীর : অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিমূলক সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট শক্তিশালী এবং নিরপেক্ষ। এখন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন করতে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভাব নয়। সব দল যদি নির্বাচন কমিশনের শুধু প্রতিপক্ষ না হয়ে, সহযোগী প্রতিপক্ষ হয় তাহলে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা হবে না। এমন মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সবারই মনে রাখা উচিত- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করার সব দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে যায়। এখান আওয়ামী লীগের হাতে কিছুই নেই। যা করার নির্বাচন কমিশন করবে। তাই নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা না রেখে কোনো উপায় নেই। রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস না রাখে তাহলে সুন্দর নির্বাচন কীভাবে হবে?
তিনি আরও বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও কিন্তু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে না। আর নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হলে তখন সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাই নির্বাচন প্রশ্নহীন করে সর্বজন গ্রহণযোগ্য করতে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত আছে। এখন নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর উপর নির্ভর করছে। তাই যেসব দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং সত্যিকারে সুষ্ঠু নির্বাচন আসা করে তারা নিশ্চিতভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী কিছু দল নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের দাবি অযৌক্তিক এবং অবাস্তব, মেনে নেওয়া সম্ভাব নয়। তারা শুধুই আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করছে। কারণে-অকারণে নালিশ করছে। আর এই নালিশের অন্যতম পার্টি হচ্ছে বিএনপি। যে কারণে আমি বিএনপির নাম দিয়েছি নালিশ পার্টি।
তিনি বলেন, ঘোষিত ২৩ ডিসেম্বর থেকে যে কারণে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া যাবে না। এক. ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ভোটার নিবন্ধনের যোগ্য হয় কিন্তু মার্চ মাসের পূর্বে ভোটার তালিকাভুক্ত করা যায় না। তাহলে জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হলে নতুন ভোটারা ভোটদান থেকে বঞ্চিত হবে। তারা আইনের আশ্রয় নিলে তখন জটিলতা তৈরি হবে। দুই. জানুয়ারি মাসের ১৮, ১৯ এবং ২০ তারিখে বিশ্ব এজতেমার প্রথম দফা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হবে ২৫, ২৬ এবং ২৭ তারিখে। তাই এ সময়ের মধ্যেও নির্বাচন দেওয়া সম্ভাব নয়। তিন. ১ জানুয়ারি থেকে স্কুল শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বই বিতরণের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিপুল সংখক শিক্ষক নির্বাচন কার্যক্রমে যুক্ত হলে শিক্ষা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। উদাহরণ দিলে এরকম অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে কিন্তু দিচ্ছি না। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হচ্ছে, তাই ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সঠিক সময়। ডিসেম্বরের বাইরে যাওয়া সম্ভাব নয়।
আপনার মতামত লিখুন :