আমিন মুনশি : মুহাম্মদ সা: সবসময় মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলতেন ও সদালাপ করতেন। তাঁর মধুর বচনে সবাই অভিভূত হতো। তিনি জনগণকে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘আল্লাহর ইবাদত করো,ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, সালামের বহুল প্রচলন করো এবং এসব কাজের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করো’। (সহিহ বুখারি)
অমুসলিমদের প্রতি মহানুভবতা : মুহাম্মদ সা: অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করেছিলেন। নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাস ও ধর্মালয়কে সুরক্ষিত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। কোনো দিন তাঁর প্রচারিত ধর্ম কোনো অমুসলিমের প্রতি চাপিয়ে দেননি। তিনি তার প্রজ্ঞা ও চারিত্রিক মাধুর্য দিয়ে ইসলাম গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাতেন। এ জন্য তিনি জীবনে অনেক যাতনা-লাঞ্ছনা সহ্য করেছেন, কিন্তু কোনো দিনই ব্যক্তিগত কারণে কোনো অমুসলিমের প্রতি প্রতিশোধ নেননি। মহানবী সা: বলেছেন, ‘যে কোনো অমুসলিম নাগরিককে কষ্ট দিলো আমি তার (অমুসলিমের) বাদি হবো। আর আমি যার বিরুদ্ধে বাদি হবো, কিয়ামতের দিনে আমি হবো বিজয়ী’।
অমুসলিমদের নিরাপত্তার ব্যাপারে বলেছেন, ‘তাদের রক্ত আমাদের রক্তের মতো এবং তাদের ধনসম্পদ আমাদের ধনসম্পদের মতো।’
কিছু দৃষ্টান্ত : এক ইহুদি কিশোর রাসূলুল্লাহ সা:-এর খেদমত করত। সে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূলুল্লাহ সা: তাকে দেখতে গেলেন। তার শিয়রে বসলেন। তাকে ইসলাম গ্রহণ করতে আহ্বান জানালেন। সে তখন নিজের বাবার দিকে তাকাল। বাবা বলল, তুমি আবুল কাসেমের কথা মেনে নাও। এবার ছেলেটি ইসলাম গ্রহণ করল। রাসূলুল্লাহ সা: তাঁর ঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় বললেন, ‘সব প্রশংসা আল্লাহর। তিনি ছেলেটিকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছেন’। (সহিহ বুখারি)
একবার নাজরানের একদল নাছারা মুহাম্মদ সা:-এর কাছে মেহমান হিসেবে আগমন করে। তিনি তাদের মসজিদে নববীতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এমনকি তাদেরকে তাদের নিয়ম অনুযায়ী সেখানে উপাসনা করার জন্য এবং নিজ এলাকায় গির্জা নির্মাণ, মেরামত ও পাদ্রি নিয়োগের অনুমতি দিয়েছিলেন।
শত্রুদের প্রতি মহানুভবতা : ইসলামের চরম শত্রুদের অন্তরগুলোকে আল্লাহ যেন ইসলামের দিকে ধাবিত করেন এ জন্য দোয়া করতেন মহানবী সা:। কেউ ইসলামের শত্রুদের ধ্বংস কামনা করলেও তিনি তাদের জন্য দোয়া করতেন। আবু হুরায়রা রা: বলেন, একদা আবুত তোফায়েল ও তার সঙ্গীরা এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! (ইয়েমেনের) দাউস গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং কুফরি করেছে। আপনি তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করুন। উপস্থিত লোকেরা বলতে লাগল ‘দাউসের লোকেরা ধ্বংস হয়ে গেছে। দাউস ধ্বংস হয়ে গেছে। নবী সা: বদদোয়া না করে তাদের জন্য দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি দাউস গোত্রের লোকদের হেদায়েত দিন এবং তাদেরকে (আমার কাছে) এনে দিন। (সহিহ বুখারি)
আপনার মতামত লিখুন :