রবিন আকরাম : খালেদা-তারেক একসঙ্গে মাইনাস– দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির ইতিহাসে এমন দুঃসময় আর আসেনি কোনও দিন। দুর্নীতির দুটি মামলায় দশ এবং সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার। তার বড় ছেলে তারেক রহমানেরও দুর্নীতির দুটি মামলায় সাত ও দশ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। এছাড়া ২১শে আগস্ট মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে তার। এসব দণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
বিএনপির জন্য রাজনীতি এখন আর সহজ নেই। একথা বলা যায় বিএনপির রাজনীতি কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে গেছে। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় প্রধান দলটি কি তবে পথ হারাতে বসেছে? অনিবার্য বিভক্তির চোরাগলিতে প্রবেশ করতে যাচ্ছে?
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বিএনপি সুবিধাবাদ, লাভ ও লোভের মোহ থেকে বের হয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দল পরিচালনার মতো যোগ্য নেতৃত্ব আদৌ কি বিএনপির মধ্যে আছে? ইতোমধ্যে বাজারে নানা ধরনের গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বিএনপির অন্যতম সক্রিয় নেতা গয়েশ্বর রায় যাননি। দলের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা রিজভী আহমেদকেও দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি তিনি কর্মীদের উপস্থিতিতে ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ড. কামাল হোসেনকে শেখ হাসিনার এজেন্ট কিংবা দালাল বলা যায়। এরা বাইরে নাটক করছেন। যত নাটকই করুক, শেষ পর্যন্ত এরা বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি করাবে। এই সরকারকে বৈধতা দেয়ার জন্যই একটা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন।’
কর্মীদের আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নাম নিতে নিতে ড. কামাল হোসেন মুখে ফেনা তোলে। আমাদের নেতাকর্মীরা এগুলো কত সহ্য করবেন! সে তো একবারও জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চারণ করেন না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করবে বিএনপি, আর সেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম! বিএনপি কি এখন বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি শুরু করলো নাকি!’
তিনি মনে করছেন, খুব শিগগিরই ড. কামাল হোসেনের আসল চেহারা বিএনপির কাছে উন্মোচিত হবে। আসল কথা হলো বিএনপিতে এখন কোনও যোগ্য নেতা নেই, যে খালেদা-তারেকের অনুপস্থিতিতে দলকে দিশা দিতে পারে। এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও খুব একটা আশাপ্রদ নয়। একদা স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ‘আপসহীন নেত্রী’ খ্যাতি পাওয়া দুই দুইবারের প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক পরিসমাপ্তি ও পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, সেটাই প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
লেখক ও কলামিস্ট চিররঞ্জন সরকার
আপনার মতামত লিখুন :