শোভন দত্ত : শুক্রবার নগরীর পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের লাকী হোটেলের সামনে থেকে মো. রফিক (৪৩) নামে এমন এক সিএনজি অটোরিকশা চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দেশিয় তৈরি অস্ত্র ও গুলিও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া মো. রফিক একটি সংঘবদ্ধ সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের প্রধান। তিনি চট্টগ্রামের স›দ্ধীপ উপজেলার গাছুয়া এলাকার সাইদুল হকের ছেলে।
পাহাড়তলী থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের অন্যতম হোতা মো. রফিককে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিল পুলিশ। তিনি বলেন, রফিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, সিলেট, নারায়নগঞ্জসহ পুরো দেশে বিস্তৃত রফিকের নেটওয়ার্ক। এ চক্রের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার সিএনজি অটোরিকশার মালিক। সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে ফেরত দেওয়ার নামে দফায় দফায় তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অংকের টাকা। তাকে গ্রেফতার করতে ১ বছর ধরে চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক ইউনিট।
সদরঘাট থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, মো. রফিককে গ্রেফতার করতে সন্দ্ধীপ, নারায়নগঞ্জসহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছি আমরা। তিনি কৌশলে পালিয়ে থাকতেন। তার নেটওয়ার্ক পুরো দেশে রয়েছে। বিভিন্ন জেলায় তিনি একাধিক বিয়েও করেছেন। সেখানে তার বাসাও রয়েছে। কিছুদিন পর পর বাসা পরিবর্তন করেন তিনি।
মো. রফিকের বিরুদ্ধে সদরঘাট, খুলশী, হালিশহরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি মো. নেজাম উদ্দিন।
এ চক্রের সদস্য মনির, তার স্ত্রী, শ্যালকসহ কয়েকজনকে আগে গ্রেফতার করেছিলেন বলেও জানা ওসি।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পশ্চিম) মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, মো. রফিক সিএনজি অটোরিকশা চুরিকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। মো. রফিক এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না। সবসময় স্থান পরিবর্তন করেন। এখন পর্যন্ত তার ব্যবহার করা ৪০টি সিমের নাম্বার পেয়েছি আমরা। কয়েকটা চুরির পরই নতুন নাম্বার ব্যবহার করেন তিনি। তাই তাকে গ্রেফতার করতে গিয়েও সফল হইনি আমরা।
তিনি বলেন, রফিক যাত্রী বা চালক বেশে সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে মালিকের কাছ থেকে অটোরিকশা ফেরত দেওয়ার নামে টাকা দাবি করেন। বিকাশে টাকা নেওয়ার পর এক জায়গায় সিএনজি অটোরিকশা রেখে ফেরত দেন মালিককে। গাড়ির ডকুমেন্টস রেখে দিয়ে ফের টাকা দাবি করেন এবং ডকুমেন্টস বাবদ দ্বিতীয় দফায় টাকা আদায় করেন। প্রত্যেকটা চুরির কাজ এভাবেই করতেন তিনি ও তার চক্রের সদস্যরা।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, এ চক্রের সদস্যরা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে যান। আর তাদের এ কাজে সহায়তা করেন আদালতের কিছু অসাধু কর্মচারী। সূত্র: বাংলানিউজ
আপনার মতামত লিখুন :