শিরোনাম
◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান

প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:৪৭ রাত
আপডেট : ১০ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:৪৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাহমুদুর রহমান মান্নার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও শিষ্ঠাচার: কয়েকটি নিদর্শন

তাজ হাশমী : আমি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে ১৯৭২ থেকে চিনি। এখানে ‘চিনি’ বলতে ব্যক্তিগতভাবে উভয়ে উভয়কে চেনা বা জানা বুঝাচ্ছি না। মান্না যখন চাকসুর সাধারণ সম্পাদক, আমি তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগের তরুণতম প্রভাষক । সেই ১৯৭২ সালেই আমি তার তীক্ষ্ন ও বুদ্ধিদীপ্ত বক্তৃতা ও আলোচনা খুব পছন্দ করতাম । তখন মুজিব সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট মস্কোপন্থী ছাত্র ইউনিয়ন-এর ছেলেরা একবার পিস্তল হাতে জাসদপন্থী ছাত্রদের ক্যাম্পাসে প্রচণ্ড মারধর করে । আমার সামনেই ছাত্র ইউনিয়ন-এর এক গুণ্ডা মান্নার একজন সমর্থককে প্রায় মেরেই ফেলছিলো, বলা যায় । তারপর মান্না সেখানে এসে যে ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়, তা খুব প্রশংসাযোগ্য । তার সমর্থকদের হাতে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র থাকা সত্ত্বেও, তিনি অস্ত্রের জবাব অস্ত্র দিয়ে না দিয়ে নীতি ও আদর্শ দিয়ে তা প্রতিহত করার কথা বললেন। এখানে উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে প্রচুর পিস্তল ও স্টেনগান ছিল।

পরে ১৯৮০-র প্রথম দিকে মান্নাকে আমি ডাকসুর সহ-সভাপতি হিসাবে দেখেছি, আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তখন তার প্রজ্ঞা, সৎ সাহস, ও ভদ্রতা আমাকে মুগ্ধ করেছে।

তিনি পরে আওয়ামী লীগ যোগদান করেন এবং বিএনপি ও জামায়াতের প্রচ- সমালোচনা করতেন। তবে তার বক্তৃতায় ও খবরের কাগজে লেখা নিবন্ধে তিনি সব সময় যুক্তি ও রাজনৈতিক বিরোধীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন । আমি এখানে তার লেখা গ্রন্থ ‘খালেদা জিয়ার সহস্র একদিন’ (অঙ্কুর প্রকাশনী, ঢাকা ১৯৯৪) থেকে খালেদা জিয়া সম্পর্কে তার দু-একটি উদ্ধৃতি যোগ করছি । এই বইটি মাহমুদুর রহমান মান্নার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠার প্রতিফলক, বলা যায়।

খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন (বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী), তখন তিনি খুব কম কথা বলতেন এবং খুবই সংযত ও ভদ্র আচরণ করতেন। মান্না লিখছেন: ‘খালেদা জিয়া যে কম কথা বলতেন আমি তার দুটো কারণ ভেবে দেখেছি। প্রথমত: তিনি কথা বলতে জানতেন কম এবং দ্বিতীয়ত: তিনি জানতেন যে তিনি কম জানেন। এই দ্বিতীয় জানাই বড় জানা। নিজেকে জানতে পারাটা জ্ঞানের এক বিরাট অংশ। …. ধীরে-ধীরে খালেদা জিয়ার মধ্যে দিয়ে গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। শপথ গ্রহণের দিন এবং তার পরেও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে খালেদা জিয়ার ইমেজ উজ্জ্বলতর হয়েছে। …. নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যেদিন তিনি সচিবালয়ে যান এবং সচিবদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন, পত্রিকান্তরে প্রকাশ, সে দিন অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন। খালেদা জিয়া তাদেরকে সহকর্মী বলে সম্বোধন করেছিলেন। তাতে মুগ্ধ হয়ে একজন বলেছেন আমি অভিভূত হয়েছি। … যা-ই হোক খালেদা জিয়ার নিয়ন্ত্রণ আছে আমলাতন্ত্রের ওপরে। সামরিক বাহিনীও সুবোধ এবং বিবেচক বালকের মতো আচরণ করছে।’

মান্না তার এই গ্রন্থে খালেদা জিয়ার জামায়াত-এ ইসলামীর সাথে ঘনিষ্ঠতার খুব সমালোচনা করেছেন, সন্দেহ নেই, তবে একই সাথে আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী ও নীতিহীন রাজনীতির কথা বলতেও তিনি পেছপা হননি।

এখানে উল্লেখ্য যে শেখ হাসিনা ১৯৯১ সালে গোলাম আজমের আশীর্বাদপুষ্ট হলেন, এবং আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জাস্টিস বদরুল হায়দার চৌধুরী গোলাম আজমের দোয়া চাইতে তার কাছে গেলেন।

মান্না তার এই গ্রন্থে ইদানিং রাজনৈতিকভাবে অসৎ ও এরশাদের মতো ডিগবাজি খাওয়া ব্যক্তিত্ব ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী সম্পর্কে একটা অতি সত্য ও সুন্দর কথা লিখেছেন : ‘ড. চৌধুরীর ব্যক্তিগত আচরণ যতই ভালো হোক না কেন, তার রাজনৈতিক আচরণ ভালো নয় ’ (পৃষ্ঠা ৬-২০)। সম্পাদনা : ইকবাল খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়